সেকশন

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
Independent Television
 

আল জাজিরার বিশ্লেষণ 

আমেরিকাকে সংঘাতে জড়িয়ে ইরানের সরকার ফেলতে চায় ইসরায়েল

আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, ০৪:৫৩ পিএম

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ বাড়ছে। ইরান ও ইসরায়েল একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, এতে এখন পর্যন্ত ৮০ জন নিহত হয়েছে। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েল সরাসরি এই সংঘাতে জড়াতে চায় বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ইসরায়েল কৌশলে এমন এক অবস্থা তৈরি করতে চাচ্ছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রকে বাধ্য হয়েই জড়িয়ে পড়তে হয় এবং এর ফলে ইরানের সরকারের পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি হয়।

অস্ট্রেলিয়ার ডেকিন ইউনিভার্সিটির মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শাহরাম আকবরজাদে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেন, ‘ইসরায়েল ও ইরান উভয়েই দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর সামনের দিনগুলোতে আরও হামলার আশঙ্কা রয়েছে।’

শাহরাম আকবরজাদে বলেন, ‘ইরান আপাতত প্রতিক্রিয়ামূলক জবাব দিচ্ছে এবং ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করছে। তবে তাদের বিজ্ঞানী, সামরিক ঘাঁটি বা পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা হলে তারা তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’

আকবরজাদে বলেন, ‘এটি শুধু দ্বিপাক্ষিক সংঘাত নয়—এই উত্তেজনা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকেও টেনে আনতে পারে।’

এই অধ্যাপকের মতে, ‘ইরান নিজের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চায় না। কারণ সামরিক দিক দিয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ নয়। কিন্তু ইসরায়েল চাইছে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করতে, যেখানে তাদের নিরাপত্তা রক্ষার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য হয়ে সরাসরি সংঘাতে জড়াবে। ইসরায়েলের ইচ্ছা যুক্তরাষ্ট্রকে সংঘাতে টেনে আনা এবং ইরানে এক ধরণের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটানো।’

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ইসরায়েল ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এবং প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে লক্ষ্য করে হামলার পরিকল্পনা করেছে। এরই মধ্যে খামেনির বাসভবন ও প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের আশপাশে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আয়াতুল্লাহ খামেনি স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল যদি মনে করে, এই আঘাতেই সব শেষ, তাহলে ভুল করছে। ইরান যুদ্ধ শুরু করেনি, তবে শেষ করবে ইরান। তাদের অক্ষত রাখা হবে না।

ইসরায়েলের ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সহযোগিতা করছে। এটি অনেক বিশ্লেষকের মতে, একটি সূক্ষ্ম বার্তা—যুক্তরাষ্ট্র যদিও প্রকাশ্যে সম্পৃক্ত নয়, কিন্তু পর্দার আড়ালে সহযোগিতায় অংশ নিচ্ছে।

ইরান পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, কেউ যদি ইসরায়েলের পক্ষে এই অভিযানে বাধা দেয়, তাহলে সেই দেশের সামরিক ঘাঁটিই তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হবে।
 
ইতোমধ্যে ইসরায়েল বিভিন্ন দেশে নিজেদের দূতাবাস সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে এবং ইসরায়েলি ও ইহুদি নাগরিকদের প্রকাশ্যে ইসরায়েল–সংশ্লিষ্ট প্রতীক প্রদর্শন না করার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক মহল উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবতা হলো—উভয়পক্ষ এখনও আগ্রাসী মনোভাব থেকে সরে আসেনি।

বর্তমান পরিস্থিতি কেবল একটি দ্বিপাক্ষিক যুদ্ধ নয়; এটি পরিণত হচ্ছে একটি আঞ্চলিক এবং সম্ভবত বৈশ্বিক সংঘাতে। ইসরায়েল যদি যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে সফল হয়, তাহলে তার প্রতিক্রিয়া হবে বহুদূর প্রসারী। শুধু ইরান নয়, এতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিতিশীলতা ভয়াবহ আকার নিতে পারে। এখন প্রশ্ন—যুক্তরাষ্ট্র কী ইসরায়েলের কৌশলের ফাঁদে পা দেবে, নাকি কূটনীতির পথ বেছে নেবে?

টাইমলাইন: মধ্যপ্রাচ্য সংকট
২৫ জুন ২০২৫, ১৭:০৮
মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি, কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য দিয়েছে বেশকিছু মার্কিন সংবাদমাধ্যম। এমন ঘটনা সত্য হলে ইরানের পরবর্তী...
গত ১১–১২ দিনের বিধ্বংসী যুদ্ধ। শুরু হয়েছিল ইরানে ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে। পরে জড়াল আমেরিকা। এই যুদ্ধের কারণ ‘ইরান পরমাণু বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে’। অভিযোগটা নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের, যা ডাহা মিথ্যা।...
আল জাজিরার বিশ্লেষণ 
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাত নাটকীয় মোড় নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত যুদ্ধবিরতির মাঝেও। যদিও ট্রাম্প সম্ভাব্য এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে এক ধরনের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে তুলে...
গত বিশ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের সঙ্গে জর্জ ডব্লিউ বুশ নামটা জড়ানো ছিল। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চেষ্টা করছেন যেন এই যুদ্ধের সঙ্গে তাঁর নামও জড়ায়। ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস ইরানের বিরুদ্ধে...
লোডিং...
পঠিতনির্বাচিত

এলাকার খবর

 
By clicking ”Accept”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and improve marketing.