সেকশন

রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২
Independent Television
 

জর্জ বুশের মতোই কি যুদ্ধে ঢুকলেন ট্রাম্প

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম

গত বিশ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের সঙ্গে জর্জ ডব্লিউ বুশ নামটা জড়ানো ছিল। এখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চেষ্টা করছেন যেন এই যুদ্ধের সঙ্গে তাঁর নামও জড়ায়। ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পথে এগোচ্ছে, আর ইসরায়েল চায় ইরানের সরকারের পতন হোক। এটা সবার জন্য খুবই খারাপ হবে, ঠিক যেমন ২০ বছর আগে ইরাক যুদ্ধ হয়েছিল। এ কারণে অনেক নিরীহ মানুষ হয়তো মারা যাবে, যেটা আমেরিকার বিরুদ্ধে নতুন সহিংসতা বাড়াবে। আমেরিকার সেনা এবং সাধারণ মানুষ বিনা কারণে ঝুঁকিতে পড়বে। দেশের ভেতরে দাঙ্গা বাড়বে এবং পাশের দেশগুলোও অস্থির হয়ে পড়বে।

ট্রাম্প এসব ভালো করেই জানেন, কারণ তিনি বুশের ইরাক যুদ্ধে যা ঘটেছে, সেটা দেখেছেন। ২০১৬ সালে সে বুশের যুদ্ধের নিন্দা করেছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, ‘ইরাকে থাকা উচিত ছিল না, এটা ছিল বড় ভুল।’ 

ইরানের ফর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে বাঙ্কার বাস্টার বোমা ফেলে আমেরিকা। ছবি: রয়টার্সকিন্তু এখন ট্রাম্প ঠিক সেই ভুল কাজ করতে যাচ্ছেন, যেটার জন্য তিনি বুশের সমালোচনা করেছিলেন। তিনি মিথ্যা বলে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের স্বার্থ দেখাচ্ছেন। তিনি বলছেন ইরান খুব শিগগিরই পরমাণু বোমা তৈরি করবে, যা সত্য নয়।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বারবার জানিয়েছে, ইরান এখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না। কিন্তু ট্রাম্প ও তার মিত্ররা সেই সত্য অস্বীকার করছে। মাত্র তিন মাস আগে, ট্রাম্পের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড একটি সিনেট কমিটিকে বলেছিলেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে না এবং সর্বোচ্চ নেতা খামেনি ২০০৩ সালে স্থগিত করা পরমাণু অস্ত্র প্রোগ্রাম অনুমোদন দেননি। ২০০৭ সাল থেকে মার্কিন গোয়েন্দারা এই রিপোর্টই দিয়ে আসছে।

তবু যুদ্ধপক্ষের উভয় দলের অনেকেই এই সত্য অস্বীকার করে বরং মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। ট্রাম্প নিজেও সম্প্রতি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমি যা শুনেছি তাতে আমার কিছু যায় আসে না, আমি মনে করি তারা খুব কাছাকাছি ছিল।’

কেন যুদ্ধের পথে চলছে? কারণ ইসরায়েল ও ট্রাম্প নিজেদের স্বার্থে যুদ্ধ চায়। ইসরায়েল চায় আমেরিকা তাদের পাশে দাঁড়াক।  ইসরায়েলি নেতৃত্ব, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, অনেক সময় ধরে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পক্ষে কাজ করে আসছে। তারা বুঝতে পারছে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য দরকার। ইসরায়েল ট্রাম্পকে সরাসরি যুক্ত করে যুদ্ধ শেষ করাতে চাইছে। এক্ষেত্রে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সব ধ্বংস সামলাতে ও ব্যয় বহন করতে বাধ্য করা হবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: রয়টার্সবিশ্লেষকেরা বলছেন,  ট্রাম্প খুব দুর্বল নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। তারা ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিকল্পনা আগেই মেনে নিয়েছেন এবং যুদ্ধের আগেই ইসরায়েলকে সহায়তা দিয়েছেন।

ট্রাম্পই প্রথম মেয়াদে ইরান চুক্তি ভেঙে দিয়েছিলেন, যা ইরানের পরমাণু প্রোগ্রাম নিয়ন্ত্রণ করছিল। এরপর নিষেধাজ্ঞা আর ইরানের জেনারেলের হত্যাকাণ্ড যুদ্ধের পথে আরও তীব্রতা আনে।

এই যুদ্ধের জন্য ট্রাম্পই সবচেয়ে বেশি দায়ী এবং এখন সে দেশকে এই বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

তবে এখনও যুদ্ধ থামানোর সুযোগ আছে। ইরান এখনো শান্তি চাইছে, আমেরিকার জনগণও এই যুদ্ধ চায় না। কিন্তু সবকিছু ট্রাম্পের হাতে, তিনি যদি ইসরায়েলকে থামাতে না পারেন, তাহলে বিপদ বাড়বে।

প্রায় প্রতিটি যুদ্ধের পদক্ষেপ ট্রাম্পই রেখেছেন। আর এখন তিনি দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন সেই অন্ধকার গর্তের দিকে, যেখানে যুদ্ধের শুরু।

তবে এখনো পরিস্থিতি শান্ত করার সুযোগ আছে। আমেরিকার জনগণ ও ট্রাম্পের নিজের সমর্থকরা এই যুদ্ধ চায় না। ইরানি কর্মকর্তারা যুদ্ধের আগে মীমাংসার জন্য আগ্রহী ছিলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরও ইসরায়েলকে সংকেত দিয়েছিলেন তারা আলোচনায় নমনীয় হতে পারে। গালফের সহযোগীরা ট্রাম্পকে ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চাপ দিতে বলেছে। সবকিছু এখন ট্রাম্পের ওপর নির্ভর করছে—তাঁর সাহস আছে কিনা নেতানিয়াহুকে থামানোর। আর সেটাই আসল সমস্যা।

তথ্যসূত্র: জ্যাকবইন

মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি, কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে এ তথ্য দিয়েছে বেশকিছু মার্কিন সংবাদমাধ্যম। এমন ঘটনা সত্য হলে ইরানের পরবর্তী...
গত ১১–১২ দিনের বিধ্বংসী যুদ্ধ। শুরু হয়েছিল ইরানে ইসরায়েলের হামলার মাধ্যমে। পরে জড়াল আমেরিকা। এই যুদ্ধের কারণ ‘ইরান পরমাণু বোমা তৈরির দ্বারপ্রান্তে’। অভিযোগটা নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের, যা ডাহা মিথ্যা।...
আল জাজিরার বিশ্লেষণ 
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাত নাটকীয় মোড় নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত যুদ্ধবিরতির মাঝেও। যদিও ট্রাম্প সম্ভাব্য এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে এক ধরনের কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে তুলে...
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে একটি নতুন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন। তিনি এমন সম্পর্কের ব্যাপারে ইঙ্গিত...
যারা রাজনীতিকে কলুষিত করতে চায়, তাদের দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 
লোডিং...

এলাকার খবর

 
By clicking ”Accept”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and improve marketing.