দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সারা দেশে আজ থেকে স্কুল–কলেজ ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে এরই মধ্যে দেশের কয়েকটি জায়গায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। একদিকে তীব্র গরম অন্যদিকে বিদ্যুৎ না থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় স্কুল খোলার প্রথম দিনে তীব্র গরমে শিক্ষকসহ ১০ ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত হরণী ইউনিয়নের হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাই স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, তীব্র গরমে ও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সকাল ১০টা থেকেই হাতিয়া জনকল্যাণ শিক্ষা ট্রাস্ট হাই স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ বোধ করছিল। দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিক্ষকসহ মোট ১০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিদ্যালয়ে চিকিৎসক এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আলী মানসুর বলেন, তীব্র গরমে আসলে ক্লাস করানো কঠিন। সবারই হাঁসফাঁস অবস্থা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে মোট ১০ জন অসুস্থ হয়েছেন। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ক্লাস করানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশীষ চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। জেলা শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথাও বলেছি। বিদ্যালয়টি সম্ভবত টিনশেড তাই এমন অবস্থা হয়েছে। বিদ্যুৎও ছিল না। তবে বর্তমানে সবাই ভালো আছে।’
এদিকে প্রচণ্ড গরমে একই জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আমান উল্যাপুরের জয়নারায়নপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় রোববার সকাল ১০টার দিকে পাঠদানের আগেই আফিফা রিজওয়ানা নামের এক শিক্ষার্থীর অজ্ঞান হয়ে পড়ে। চতুর্থ শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী একই মাদ্রাসার শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে।
জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে আফিফা হঠাৎ গরমে অজ্ঞান হয়ে যায়। তারপর সবাই তার মাথায় পানি ঢালতে থাকেন। এরপর তার বাবা দেলোয়ার হোসেন তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।
মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আফিফা অজ্ঞান হয়ে পড়লে আমরা দ্রুত মাথায় পানি দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেই। তার বাবা তাকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। আফিফা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর এমন অবস্থা হয়েছে। যাদের খারাপ লাগে বা গরমে অস্বস্তি লাগে আমরা তাদের ছুটি দিয়ে দিচ্ছি।’
মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল তৈয়ুব উল্যাহ বলেন, ‘আমাদের ক্লাস শুরু ১০টা ২০ মিনিট থেকে। তার আগেই এমন ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় প্রায় শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছে। পাঠদানের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকলে এমন ঘটনা ঘটবে না বলে আমি মনে করি।’
বেগমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। বিদ্যুৎ সমস্যার জন্য যদি এমন হয় তাহলে বিদ্যুৎ অফিসের সঙ্গে কথা বলব৷’
অন্যদিকে প্রচণ্ড গরমে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে হাসাইল বানারী ইউনিয়নের বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সুমি আক্তার নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অসুস্থ গয়ে পড়ে। সে হাসাইল বানারী ইউনিয়নের আটিগাও গ্রামের সুমন মুন্সীর মেয়ে।
রোববার দুপুরে ক্লাস চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরপরই ওই শিক্ষার্থীকে টঙ্গীবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বানারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কায়েসুর রহমান বলেন, ‘তীব্র গরমে আমাদের বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী অসুস্থ হলে আমরা সাথে সাথে ওই ছাত্রীকে টঙ্গীবাড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাই। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী অনেকটাই সুস্থ আছে।’