পিরোজপুরের নাজিরপুরের শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নে জুতিকা বালা নামের এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সড়ে ১১টার দিকে ওই নারীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জুতিকা বালা (৫০) উপজেলার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের উত্তর জয়পুর গ্রামের নারায়ন বালার স্ত্রী।
পুলিশ বলছে, টাকার জন্য মাদকাসক্ত হয়ে কেউ ওই নারীকে কুপিয়ে হত্যা করে থাকতে পারে। এ ঘটনায় ওই নারীর ছেলে জুতিষ বালা ও জুতিষের চাচাতো ভাই উজ্জ্বল বালাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
নিহতের ছেলে ক্ষিতিশ বালা বলেন, ‘উপজেলার কালিবাড়িতে আমাদের একটি চায়ের দোকান রয়েছে। প্রতিদিন ওই দোকানের কাজ সেরে ১১-১২টার দিকে আমি ও বাবা বাড়িতে যাই। অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমরা দোকান থেকে বাড়িতে ফিরি। এর কিছুক্ষণ আগে বড় ভাই জুতিষ বালা বাড়িতে ফিরে দেখতে পান মাকে দুর্বৃত্তরা মারাত্মকভাবে কুপিয়ে আহত করে রক্তাত অবস্থায় ঘরে ফেলে রেখে গেছে। ওই অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। তবে পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।’
ক্ষিতিশ আরও বলেন, ‘আমাদের ঘরে কিছু টাকা ছিল। ধারণা করছি কেউ ওই টাকা নিতে আসলে মা তাতে বাঁধা দেন। এর জের ধরে মাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে মা গত প্রায় ১০ বছর ধরে সামান্য মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। বাড়িতে তিনি একা একা থাকতেন। আমাদের পারিবারিক কোনো শত্রু নাই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সিন্টু হাওলাদার বলেন, ‘খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখান থেকে চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা পাঠান। পতেই তাঁর মৃত্যু হয়।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার জিনাত তাসনিম বলেন, ‘ওই নারীর নাক, মুখ ও ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাঁড়ালো অস্ত্রের কয়েকটি কোপের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।’
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম হাওলদার বলেন, ‘পুলিশ সুপারসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। কী কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে তা ধারণা করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তাঁদের আর্থিক অবস্থা মোটেই ভালো না। তাছাড়া তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী।’