পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে শিশুসহ একই পরিবারের ৮ জনকে অচেতন করে চুরির ঘটনা হয়েছে। মঙ্গলবার সাহরি শেষে এ ঘটনার শিকার হয় তারা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় অচেতন আটজনকে উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অচেতন ব্যক্তিরা হলো– উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে সিদ্দিকুর রহমান বেপারি (৬০), তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০), ছেলে বাহাউদ্দীন হোসাইন বেপারি (২৬), মেয়ে নাজমুন্নাহার বেগম (২৭) ও নাজমুন্নাহার বেগমের ছেলে রিফাত ফরাজী (৬)। অন্য অচেতনরা হলো– বাড়িটিতে বেড়াতে আসা বাহাউদ্দীনের নানা শ্বশুর সেকেন্দার আলী মোল্লা (৭৫) ও রেদোয়ান ইসলাম (১৪)। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিবারের সকলে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর মঙ্গলবার ভোররাত ৩টা ৪৫ এর দিকে তারা সবাই সাহরির খেতে ঘুম থেকে ওঠে। এসময় পরিবারের একজন বাদে সকলে সাহরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সেহরির খেয়ে তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা সেকেন্দার আলী মোল্লা নিজের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। পথে তিনি অচেতন হয়ে পরলে আশেপাশের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। অপরদিকে পরিবারের যিনি সাহরি না খেয়ে ঘুমিয়েছিলেন তিনি ঘুম থেকে উঠে ঘরের সবকিছু এলোমেলো ও সকলকে অচেতন অবস্থায় দেখে ডাক–চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এসে অচেতন সদস্যদের উদ্ধার করে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে।
পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে জ্ঞান ফেরা বাহাউদ্দীন হোসাইন বেপারি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমার ছোট ভাই সালাউদ্দিন বেপারিকে (১২) টাকার দাবিতে পরিকল্পিতভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে স্থানীয় সোহান, রাজিন, বায়জিদ, মারুফ, নাইম ও বেল্লাল। তাদের সঙ্গে আমাদের আদালতে মামলা চলছে। আমার ধারণা তারা আমাদের অচেতন করে ঘরে থাকা সোনাদানা ও টাকা–পয়সা এবং মামলার কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা এই কাজ করে থাকতে পারে।’
পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরঞ্জিত সাহা বলেন, ‘তাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। তাদের অবস্থা বোঝা যাচ্ছে না এবং পরিবারের কেউ কিছু বলতে পারছে না। ধারণা করা হচ্ছে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে তাদের অচেতন করা হয়েছে।’
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’