বরগুনায় স্ত্রীর ছোট বোনকে ধর্ষণ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার দায় অভিযুক্ত দুলাভাই ইলিয়াস পাহলানকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। আজ রোববার অভিযুক্তের উপস্থিতিতে এই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস।
ফাঁসির দণ্ড পাওয়া ইলিয়াস পাহলান সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা এলাকার আবুল হোসেন পহলানের ছেলে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি রঞ্জু আরা শিপু।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার রোডপাড়া গ্রামে স্ত্রীর ছোট বোন মোসা. রিগানকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল তার দুলাভাই ইলিয়াস পহলান। ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট তিন বছরের শিশুকন্যা ও প্রতিবেশী এক শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন শালী রিগান। এই সুযোগে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে ইলিয়াস তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এতে বাধা দেন তিনি। একপর্যায়ে ঘরে থাকা দা উঁচিয়ে ইলিয়াসকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। এসময় ইলিয়াস হাত থেকে দা কেড়ে নিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। পাশে ঘুমানো প্রতিবেশী শিশু জেগে উঠে ইলিয়াসকে বাধা দেয়। তাকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে ইলিয়াস। পরে ওই নারীর শিশুকন্যাকে কুপিয়ে সে বাড়ি ফিরে যায়।
সকালে প্রতিবেশীরা এক শিশুর মরদেহ এবং ওই নারী ও তার মেয়েকে জখম অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং মা ও শিশুকে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পি পি রঞ্জু আর শিপু বলেন, ‘আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী ও শালি রিগানের ২২ ধারার জবানবন্দি এবং অন্যান্য সাক্ষীদের সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে আজ বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক রায় দেন। রায় উল্লেখ করেন রিগানকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আসামিকে দশ বছরের কারাদণ্ড, তাকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগে আরও দশ বছরের সাজা এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া ওই দুই শিশুকে হত্যা অভিযোগে অভিযুক্তকে ফাঁসির দণ্ডের আদেশ এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।’