নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় বাড়িতে খতনার সময় এক শিশুর লিঙ্গ কেটে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ উঠেছে হাজামের বিরুদ্ধে। তাঁকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নদনা ইউনিয়নের বোরপিট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত মামুন মিয়া নোয়াখালী সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম বারাহিপুর গ্রামের মো. হানিফের ছেলে। এ ঘটনায় আহত শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, বিকালে একটি গ্রামে ৭ বছর বয়সী এক শিশুর খতনা করতে যান মামুন মিয়া। এ সময় ক্ষুর দিয়ে চামড়া কাটতে গিয়ে শিশুটির জননাঙ্গের সামনের অংশ কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন তিনি। এতে শিশুটির প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে তাকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভীর হায়দার ইমন জানান, শিশুটির লিঙ্গের সামনের অংশ কেটে ফেলে হাজাম। হাসপাতালে আনার পর শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই তিনি এবং নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ অভিজ্ঞ চিকিৎকগণ শিশুটির চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। তবে শিশুটির লিঙ্গের কাটা অংশ নোয়াখালীতে পুনস্থাপনের ভালো কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তাকে ঢামেকে পাঠানো হয়েছে।
সোনাইমুড়ি থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন জানান, অভিযুক্ত হাজাম মামুন মিয়াকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে লোকজন। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এর আগে গত ২১ ফেব্রুয়ারি জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা সহকারী ৭ বছরের এক শিশুর খতনার সময় অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলে। পরদিন স্বাস্থ্য বিভাগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক মো. মহিউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটিকে দেখতে যান। ওইদিনই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুটিকে দেখতে যান নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান (সিনিয়র কনসালটেন্ট) সাইফ উদ্দিন। এরপর তার পরামর্শ অনুযায়ী শিশুটিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে শিশুটি চিকিৎাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসা সহকারী সৌরভ ভৌমিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিষিদ্ধ করা হয় এবং দায়িত্বরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার বিজয় কুমার দেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়।
এছাড়া ঘটনা তদন্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. যোবায়েরকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।