চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে প্রেমজনিত ঘটনায় গলায় দুই কিশোর আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে তাদের মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মারা যাওয়া দুজন হলো আবুল ওসমান (১৭) ও মো. ফাহিম (১৬)। এদের মধ্যে আবুল গলায় ফাঁস দিয়ে ও ফাহিম কীটনাশক পানের পর মারা যায়। শুক্রবার রাতে ঘটে এ ঘটনা। উপজেলার সুবিদপুর পশ্চিম ইউনিয়নের শোল্লা গ্রামে বাড়ি তাদের। আবুল ওই গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে। ফাহিম একই গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।
আবুল ওসমানের পরিবারের বরাত দিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সৈকত মোল্লা জানান, আবুল ওসমান স্থানীয় একটি কলেজ থেকে চলতি বছরে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সম্প্রতি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বরিশালের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। এ নিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।
তিনি জানান, শুক্রবার বিকেলে পরিবারের সবাই মিলে তারা এক আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াতে যায়। সেখান থেকে আবুল ওসমান সবার আগে বাড়িতে চলে আসে। রাতে তাঁর বাবা বাড়িতে এসে দেখেন আবুল ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলে আছে। পরে তাঁর বাবার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে পুলিশকে খবর দেয়।
ওই ইউপি সদস্য আরও জানান, ফাহিম নামে অপর কিশোর স্থানীয় একটি বিদ্যালয় পড়তো। কয়েকমাস আগে সে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে একটি বিস্কুট কারখানায় কাজ শুরু করে। সে–ও একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজনকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। তবে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় তার পরিবারের লোকজন তাকে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। সেই জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় কীটনাশক পান করে। পরিবারের লোকজন টের পেয়ে তাকে স্থানীয়দের সহায়তায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হানিফ সরকার বলেন, খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে ওই দুই কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক এই দুই কিশোর প্রেম সংক্রান্ত কারণে আত্মহত্যা করেছে বলে পারিবারিকভাবে উপস্থাপিত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি। উভয় ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।