জুলাই আন্দোলনের সময় থেকে ভেঙে পড়েছে চট্টগ্রামে পুলিশের সিসিটিভির নজরদারি। ভাঙচুর-চুরি ও যান্ত্রিক ত্রুটিতে শহরজুড়ে বসানো ৭০০ সিসি ক্যামেরার কোনোটিই আর কাজ করছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিবেদন তৈরি না হওয়া, বাজেটসহ নানা সীমাবদ্ধতায় ক্যামেরাগুলো এখনও সচল করা যায়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সিসি ক্যামেরা না থাকার সুযোগে নাশকতা ও অপরাধ ঘটাতে পারে বিভিন্ন গোষ্ঠী।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও সড়কে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন। কোথাও আবার শুধু তার ঝুলছে, নেই ক্যামেরা। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বসানো ৭০০ সিসি ক্যামেরার প্রায় সবগুলোরই এমন দশা। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময়ে ভাঙচুর, চুরি ও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভেঙে পড়েছে নগরীর সিসিটিভি নজরদারির ব্যবস্থা। এতে হুমকিতে পড়েছে নাগরিক নিরাপত্তা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘এখানে কয়েক দিন আগেও একটা ছিনতাই হয়েছে। কিছুই নাই। পুলিশ অপরাধীকে ধরবে কীভাবে! শনাক্ত করবে কীভাবে!’
এক পথচারী বলেন, ‘সিসিসি ক্যামেরাগুলো থাকায় আমাদের চলাফেরা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হতো। এখন সেগুলো না থাকায় আমরা একটু ঝুঁকিতে আছি।’
জানা গেছে, ২০২১ সালের চট্টগ্রাম নগরীতে ১৬টি থানার ৭০০ স্পটে এসব সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সিএমপি। এসব ক্যামেরা অচল থাকায় বিপাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অপরাধের তদন্তে কোনো কাজে আসছে না পুলিশের কেন্দ্রীয় সিসিটিভি মনিটরিং সেন্টার। অপরাধী চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। এ সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ উপ-কমিশনার রইস উদ্দিন বলেন, ‘সিসিটিভির যে সুবিধাটা, সেটা এই মুহূর্তে আমরা পাচ্ছি না। বিষয়টি আমাদের মাথায় রয়েছে। আমরা আবারও যাতে আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ঢেলে সাজাতে পারি, বিশেষ করে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে রয়েছে, সেগুলোকে যাতে আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসতে পারি সে নিয়ে কাজ চলছে।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই সিসিসি ক্যামেরাগুলো অবিলম্বে চালু করা উচিত। অন্যথায় একদিকে পুলিশ যেমন অপরাধী শনাক্তে অসহায় বোধ করবে, অন্যদিকে অপরাধী অপরাধ করার জন্য উৎসাহী হবে।’