কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের নলচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে যুবদলের নেতা রবিউল ইসলাম রবি ও বিএনপির বারেক প্রধান গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হয়, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তারা একই গ্রুপে ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মেঘনা উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি মাহবুবা ইসলাম মিলিসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রবি ও বারেকের নেতৃত্বে এই দুটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীপথে চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ছিল। তবে সম্প্রতি এই অবৈধ অর্থের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এর জের ধরেই কয়েকদিন যাবত তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং মঙ্গলবার রাতে সংঘর্ষ বাঁধে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সংঘর্ষের সময় উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একে–অপরের ওপর হামলা চালায়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, রাতের অন্ধকারে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষ বেশ সময় ধরে চলে।
চালিভাঙ্গার ইউনিয়নের রামপ্রসাদেরচর গ্রামের কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের সদস্য ও মেঘনা উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মহসিন বলেন, ‘অবৈধ বালুর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ হয়েছে। এদের মতো লোক দলে না থাকা ভালো, থাকলে দলের ধ্বংস হবে। আমাদের নেতা তারেক রহমানের নির্দেশ এ ধরনের নেতাদের যেন দলে না রাখা হয়।’
নলচর গ্রামটি মূল সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এখন পর্যন্ত সংঘর্ষের বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। প্রত্যন্ত এই এলাকায় সরাসরি পৌঁছানো কঠিন হওয়ায় প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে বক্তব্য নিতে রবিউল ইসলাম রবি ও বারেক প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঘটনার বিষয়ে মেঘনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল ইনডিপেনডেন্টকে বলেন, ‘ওদের সঙ্গে কথা হয়েছে দুপক্ষের আহত লোকজন এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরা একইসঙ্গে চলাফেরা করে। বালু উত্তোলন নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব থেকে মারামারি হয়েছে । উভয় পক্ষের ২০-২৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’