অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সফরকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র। কাঁটাতারের বেষ্টনীর ভেতরে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্ধিত ২০ নম্বর এলাকা একটি মাঠে তৈরি করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের বসানোর জন্য। মাঠের পুরোটাই ত্রিপল বিছানো হয়েছে। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে সেখানেই এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন ইউনূস-গুতেরেস।
কয়েক ঘণ্টার সফরে তাঁরা কথা বলবেন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের সঙ্গে। পরিদর্শন করবেন রোহিঙ্গাদের লার্নিং, কালচারাল ও প্রোডাকশন সেন্টার। তাদের এই সফর রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। এই সফর ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছেন রোহিঙ্গারা।
শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মনেও একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে যে, তাদের পাশে বাংলাদেশ ও সারা বিশ্ব রয়েছে। সুতরাং মাতৃভূমিতে ফেরত যাওয়ার সাহস তাদের তৈরি হবে।’
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘আন্তোনিও গুতেরেস যদি আমাদের কাছে আসে, আমরা একটাই কথা বলব, বাংলাদেশ আমাদের দেশ নয়। এখানে আমরা সারা জীবন থাকতে চাই না। ৮ বছর এখানে হয়ে গেছে। আমাদেরও দেশ আছে। রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব হলো ইউএনএইচসিআরের। তারা যদি আমাদের সেফ জোন করে দেয়, তাহলে আমরা চলে যাব।’
ক্যাম্পের অন্যান্য রোহিঙ্গারা বলছেন, এখন খাবারের জন্য যে বরাদ্দ রয়েছে তা নিয়ে সুযোগ পেলে তাঁরা কথা বলবেন গুতেরেসের সঙ্গে। পাশাপাশি নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার ব্যবস্থার দাবি করে দেওয়ার কথা জানাবেন তারা।
জাতিসংঘের মহাসচিবের পরিদর্শন করবেন ১৮ নম্বর ক্যাম্পের লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গা সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সেবা এবং ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র। সেজন্য এসব স্থানের যাতায়াতের রাস্তাগুলো করা হয়েছে মেরামত, বসানো হয়েছে নতুন ইট। একইসঙ্গে নতুন করে সেজেছে পরিদর্শনের স্থানগুলো।
আশ্রয়শিবিরে কার্যক্রমগুলোর তত্ত্বাবধান করছেন সেনাবাহিনী। তাদের সঙ্গে রয়েছে পুলিশ, এপিবিএন, জেলা প্রশাসন এবং শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন। আর জাতিসংঘের মহাসচিব ও প্রধান উপদেষ্টার আগমনে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা বলয় থাকবে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।