জমি দখল, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্ব প্রদীপ কার্বারী ত্রিপুরার বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের পাশাপাশি নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। যথাযথ অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা।
খাগড়াছড়ির রামগড়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বিশ্ব প্রদীপ কার্বারী ত্রিপুরা, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নিকটআত্মীয়। ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রীর প্রভাবে জোর করে জমি দখল, নিরীহ মানুষকে মারধর ও মামলা দিয়ে হয়রানিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীরা জানান, জগন্নাথ পাড়ার নিজ বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা তৈরির জন্য তাদের জায়গা দখল করেছেন তিনি। দেননি কোনো ক্ষতিপূরণ। এ ছাড়া পানি প্রবাহের ড্রেন বন্ধ করে দেওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।
ভুক্তভোগী এক স্থানীয়র ভাষ্য, ‘এখানে আমার বাড়ির জায়গা দখল করে তিনি রাস্তা নির্মাণ করেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। এখানে একটা ড্রেন ছিল। সেটা বন্ধ করে দিয়েছেন চেয়ারম্যান। তাঁর কাছে আমরা অনেকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু আমাদের কথা শোনেননি। অনেক কৃষকের জমি নষ্ট হয়েছে।’
মন্ত্রী ও দলের প্রভাব খাটিয়ে দক্ষিণেশ্বরী রামগড় কালী মন্দিরের উন্নয়ন কাজ হাতিয়ে নেন বিশ্ব প্রদীপ। অথচ কোনো কাজ না করেই বরাদ্দের ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন মন্দির কমিটি।
শ্রী শ্রী দক্ষিণেশ্বরী রামগড় কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শুভাশিষ দাস বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে পুরোহিত শেড নির্মাণের জন্য প্রায় ৩২ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। এটার ঠিকাদার ছিল বিশ্ব প্রদীপ কার্বারী। কিন্তু প্রকল্পটি আর বাস্তবায়িত হয়নি।
এসব অভিযোগ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাই সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেব। বিশেষ করে যে কোনো অবৈধ স্থাপনা বা খাস জমি দখল হয়ে থাকলে তা উদ্ধারে পদক্ষেপ নেব।’
গত ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের পর রামগড় থানায় তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর পর থেকে পলাতক আছেন বিশ্ব প্রদীপ ত্রিপুরা।