তথ্য গোপনের অভিযোগে নোয়াখালীর ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে মুরাদ হোসেন রাব্বিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ফেসবুক পেজে দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, গত ২৩ মার্চ নোয়াখালী জেলা শাখার অধীনে ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি প্রকাশ করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর ঘোষিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন রাব্বির বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির আজ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুরাদ হোসেন রাব্বির বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করে পদ পাওয়ার বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদ আমাদের নজরে আসে। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।’
গত ২৩ মার্চ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির নোয়াখালীর ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের নতুন কমিটি অনুমোদন দেন। এর মধ্যে ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের ২০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে মুরাদ হোসেন রাব্বিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র না হয়েও মুরাদ হোসেন রাব্বির সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া নিয়ে সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ, হতাশা ও বিস্ময় প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের একাধিক ছাত্রদল নেতা জানান, মুরাদ হোসেন রাব্বি জালিয়াতির মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। তিনি ভুলুয়া কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এর পর নোয়াখালী সরকারি কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হন। ভুলুয়া কলেজে তাঁর ছাত্রত্ব না থাকলেও তিনি সংগঠনের নেতাদের ধোঁকা দিয়ে সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। তাঁর এমন কর্মকাণ্ডে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
অভিযোগ অস্বীকার করে মুরাদ হোসেন রাব্বি বলেন, ‘ছাত্রদলের একজন পরীক্ষিত কর্মী হিসেবে আমি দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। এ জন্য বিগত দিনে ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে হত্যাচেষ্টা করেছে। আমি ভুলুয়া কলেজের সাবেক কমিটিতে ছিলাম। আমাকে মূল্যায়ন করে বর্তমান কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আমার ছাত্রত্বের সকল প্রমাণ আছে।’
এদিকে মুরাদ হোসেনকে নিয়ে গত ৬ মার্চ ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মুরাদ হোসেন ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে কলেজটিতে ভর্তিকৃত উচ্চ মাধ্যমিক ব্যবসায় শিক্ষা শাখার একজন ছাত্র ছিলেন। তিনি ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন। আর গত ১৬ এপ্রিল নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়, মুরাদ হোসেন কলেজের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ডিগ্রি (পাস) বিএসএস কোর্স ২য় বর্ষের ছাত্র।