বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে কুমিল্লার পুলিশ লাইনসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার মামলায় কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ‘আওয়ামীপন্থী’ ৬ আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে কুমিল্লার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জামিন নামঞ্জুর হওয়া ছয় আইনজীবী হলেন– কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পিপি মুস্তাফিজুর রহমান লিটন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সাবেক এপিপি এএনএম মঈন, অ্যাডভোকেট জিয়াউল হাসান চৌধুরী সোহাগ, অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া ও অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন।
এর মধ্যে জিয়াউল হাসান চৌধুরী সোহাগ ও এএনএম মইন পলাতক রয়েছেন। বাকি চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু।
শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৩ আগস্ট কুমিল্লার পুলিশ লাইনস এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা সদর উপজেলার ডুমুরিয়া চান্দপুর গ্রামের মো. ইনজামুল হক রানা বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারকে প্রধান আসামি করা হয়। একই মামলায় কুমিল্লার আদালতের ২৬ আইনজীবীর নামও যুক্ত করেন বাদী। মামলার পর ২৬ আইনজীবী উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আজ সোমবার ২৪ আইনজীবী আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন আবেদন করেন। তবে আদালত ছয়জনের জামিন নামঞ্জুর করেন। এ ছয় আইনজীবীর মধ্যে চারজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, বাকি দুজন পলাতক রয়েছেন।
কুমিল্লার আদালতের পিপি কাইমুল হক রিঙ্কু বলেন, ‘মামলাটিতে ২৬১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়। সোমবার চব্বিশ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালত ছয়জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বাকি ১৮ জনকে পুলিশ চার্জশিট দেওয়া পর্যন্ত জামিন আবেদন মঞ্জুর করে তদন্তে সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে মামলার শুনানি চলাকালে আদালত প্রাঙ্গণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতা ও সাধারণ ছাত্র-জনতা আসামিদের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন। ৩ আগস্টের হামলায় জড়িত আইনজীবীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে বলে দাবি তাদের।
এদিকে শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর ডিম ছুড়ে মারা হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।