খাগড়াছড়ির রামগড়ে সরকারি ভ্যাকসিনের কারণে গরু ও ছাগলের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ গত দুই দিন ধরে মারা যেতে শুরু করে ভ্যাকসিন দেওয়া গরু-ছাগলগুলো। উপজেলার ১নং রামগড় ইউনিয়নের লামকুপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
১২ দিনের ব্যবধানে সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৬টি ছাগল ও ৪টি গরু মারা যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও অসুস্থ হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে আরও অন্তত অর্ধশতাধিক গরু-ছাগল। এ ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছে ওই এলাকার খামারি ও বসতবাড়িতে গরু-ছাগল পালনকারীরা।
ঘটনাটির সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা জড়ো হয়েছেন রামগড় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে।
গ্রামবাসী ও ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, রামগড় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রুবায়েতুল ইসলামের পরামর্শে তার দুই সহকারী জামাল উদ্দিন ও রমজান গত ১৫ এপ্রিল লামকুপাড়া এলাকায় গরু ও ছাগলের মাঝে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেন। ভ্যাকসিন দেওয়ার একদিন পার হতে না হতেই গরু ও ছাগলের অসুস্থতা দেখা দেয়। এরপর এক এক করে মারা যায় গবাদি পশুগুলো। গবাদিপশু মালিকদের দাবি এসব ভ্যাকসিনে সমস্যা ছিল কিংবা একই সিরিজে সবগুলো পশুকে ভ্যাকসিন দেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
লুৎফর রহমান নামে স্থানীয় এক খামারি অভিযোগ করে বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই দিন পর তার ৩টি ছাগল ও ২টি গরু মারা যায়। তার খামারে আরও অন্তত ১৫টি ছাগলকে ভ্যাকসিন দিয়েছিল পশু চিকিৎসকরা। ধীরে ধীরে সবগুলো ছাগল অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমাদের গ্রামে যারা ভ্যাকসিন দিয়েছে তাদের সবার গরু-ছাগলে একই অবস্থা।’
লামকুপাড়া গ্রামের গৃহিণী সায়েরা খাতুন বলেন, ‘আমার দিনমজুর স্বামী বেশিরভাগ অসুস্থ থাকেন। গরু ছাগল লালন-পালন করেই আমাকে সংসার চালাতে হয়। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর আমার ৩টি ছাগল মারা গেছে। বাড়িতে আরও ৩টি অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে।’
একই অভিযোগ লামকুপাড়ার ওবায়দুল হক, আবুল কাশেম, আবদুল করিম, শান্তনু দেবী ও চিকনি ত্রিপুরার। তাদের দাবি, এই ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং দায়ীদের বিচার।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করেন রামগড় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রুবায়েতুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মারা যাওয়া ছাগলগুলোকে গড ফক্স নামে একটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তবে গরু মারা যাওয়ার বিষয়টি গুজব। ভ্যাকসিনের মেয়াদ ছিল এবং ফ্রিজে সংরক্ষণ করা ছিল। তবুও মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আক্রান্ত গবাদিপশুগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের কোনো সুযোগ আমাদের নেই।’
রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতা আফরিন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি, তবে এখন পর্যন্ত আমার কাছে এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’