রাঙামাটিতে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি ভাঙতে সক্ষম হয়েছে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা। টানা পাঁচদিনের চেষ্টার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় এটি পুরোপুরি ভেঙে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে ফ্যাসিবাবিরোধী ছাত্র-জনতার সমন্বয়ক ইমাম হোসেন ইমু বলেন, ‘চার থেকে পাঁচদিন ধরে ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলানো হচ্ছে। আজ বিকেলে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।’
অবশ্য রাঙামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ উদ্দিন বলেছেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত নই, যারা নির্মাণ করেছে তারা জানবে।’
আর ভাস্কর্যটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকতা খন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিমও দাবি করেছেন, বিষয়টি জানেন না তারা।
গত ১৩ মে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে রাঙামাটিতে এক বিক্ষোভ মিছিল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণের জন্য প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তা না হলে শুক্রবার (১৬ মে) ছাত্র–জনতা নিজেরাই শেখ মুজিবের ভার্স্কয ভাঙবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়।
৪৮ ঘণ্টা শেষ হলে ১৬ মে বিকেলে ফ্যাসিবাবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদী বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ-মিছিল বের হয়ে সদর উপজেলা প্রশাসনের সামনে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের একপাশের অবস্থান নেয়। পরে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা নেতারা।
এক পর্যায়ে স্থানীয় ১০ থেকে ১৫ জনের শ্রমিক দিয়ে ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করা হলেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে ভাঙা সম্ভব হয়নি। পরে চট্টগ্রাম থেকে একটি হ্যামার স্ক্যাভেটর এনে ভাস্কর্যটি ভাঙার চেষ্টা হয়। অবশেষে দৈর্ঘ্য ৩১ ফুট ও ১২ ফুট প্রস্থের দাঁড়ানো ভাস্কর্যটি মঙ্গলবার বিকেল ৬টার দিকে ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয় ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা নেতারা। এসময় ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার দৃশ্য দেখতে শত শত মানুষ জড়ো হয়। এ ভাঙার দৃশ্য অনেকেই মোবাইলফোনে ধারণ করে।
উল্লেখ্য, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১০-১১ অর্থ বছরে ৩০ হাজার বর্গফুট এলাকাজুড়ে জেলা নির্বাচন কার্যালয়, সদর উপজেলা পরিষদ ও সেনা জোন সদর কার্যালয়ের মাঝখানে দৈর্ঘ্যে ৩১ ফুট ও ১২ ফুট প্রস্থের শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। ভাস্কর্যটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় চার কোটি টাকা। তবে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যটি প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছিল।