অপহরণ ও হামলার ভয়ে আতঙ্কে রয়েছেন কক্সবাজারের টেকনাফের জেলেরা। নাফ নদী ও সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে আরাকান আর্মির হাতে আটক হচ্ছেন তারা। মোটা অংকের মুক্তিপণ দিয়ে মিলছে মুক্তি। এতে উদ্বেগে আছে জেলে পরিবারগুলো। গত ৫ মাসে অপহরণ হয়েছেন অন্তত দেড় শতাধিক জেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, অপহরণ ঠেকাতে নদী ও সাগরে নিয়মিত টহল চলছে।
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীর ওপারে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য। যা দখল করে নিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। নদী পথে তাদের টহল নিয়মিত। বাংলাদেশি পতাকাবাহী মাছ ধরার ট্রলার দেখলেই অপহরণ করে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি, মাঝে মাঝে গুলিও ছোঁড়ে তারা।
আরাকান আর্মির আতঙ্কে দিন কাটছে জীবিকার তাগিদে সাগরে যাওয়া জেলেদের। তাঁদের অভিযোগ, আরাকান আর্মির হাত থেকে ছাড়া পেতে অনেক সময় দিতে হয় মোটা অংকের মুক্তিপণ।
এক জেলে জানান, সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে আরাকান আর্মিরা ধরে ফেলে। অনেক সময় গুলিও ছোড়ে তারা। তাদের কারণে মাছ ধরার সময় আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় কীভাবে তারা মাছ ধরবেন, সে নিয়ে চিন্তায় আছেন তারা।
নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগর দিন দিন জেলেদের জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছেন জেলে সংগঠনের নেতারা।
টেকনাফ জেলে সমাজ কমিটি সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক সুজন বলেন, ‘আমাদের জেলেরা মাছ ধরতে গেলে বিভিন্ন সময় আরাকান আর্মিরা অতর্কিতভাবে গুলি করতেছে এবং অনেকজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে আমরা প্রশাসনের সৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
নদী ও সাগরে নিয়মিত টহল দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কোস্ট গার্ড বলছে, কেবল জলসীমা লঙ্ঘন করলেই জেলেদের ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি।
টেকনাফ কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ বলেন, ‘সমুদ্রের মধ্যে রাস্তা অনেক সময় বোঝা যায় না। জেলেরা অনেক সময় ভুলক্রমে সীমান্তের বাইরে চলে যায়। তারা যাতে ভুলক্রমে সীমানা অতিক্রম না করতে পারে সে জন্য আমরা প্রতিনিয়ত মাইকিং, লিফলেট, জনসমাবেশ করে বোঝাই।’
গণমাধ্যমের তথ্য মতে, গত ৫ মাসে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার অন্তত দেড় শতাধিক জেলে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জেলেদের ফেরত আনার দাবি করলেও বাস্তবে আরাকান আর্মিকে মুক্তিপণ দিয়েই ছাড়িয়ে আনতে হয় তাদের।