একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি ঢাকার জাহাঙ্গীর আলম বদর, কিন্তু ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়েছে কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলমকে। মামলার রায়ে এ ভুল হয়েছে বলে দাবি করেছেন কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী। তিনি বলছেন, শুধু দুজনের বাবার নাম এক। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, প্রকৃত আসামিকেই ফাঁসির দণ্ড দিয়েছেন আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের আপিল শুনানিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন ২৪ জন, আহত তিন শতাধিক। ২০১৮ সালের অক্টোবরে আলোচিত এই মামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নান ও জাহাঙ্গীর আলমসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন সাজা হয় তারেক রহমানসহ ১৯ জনের।
হাইকোর্টের বিচারপতি শহিদুল করিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে চলছে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি। সেখানেই দাবি করা হয়, হুজি নেতা মুফতি হান্নানের সহযোগী ঢাকার দোহারের জাহাঙ্গীর আলম বদরের পরিবর্তে নিরপরাধ কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলমকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বিচারিক আদালত।
কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী সরোয়ার হোসাইন বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম বদর মুফতি হান্নানের সঙ্গে ৯টি মামলায় সহযোগী আসামি। সেই জন্য আমরা বলছি এটা (কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া) মিসটেক অব আইডেনটিটি এবং তাঁর (কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলম) বেকসুর খালাস পাওয়া উচিত। আশাকরি, এই অ্যাপিলেট কোর্টে সেটার প্রতিকার হবে এবং ভুলবশত মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার পর কনডেম সেলে থাকা কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলম মুক্তি পাবেন।’
আইনজীবী সরোয়ার আরও বলেন, ‘আদালতকে জানানো হয়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর অসুস্থতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করতে পারেন নি। হামলার দিন বাবার লেপ তোশকের দোকানে ছিলেন তিনি।’
কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলমের মামা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমার ভাগনের বাপের নাম ও তাঁর নাম মিল থাকার কারণে তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে সম্পূর্ণরূপে জাহাঙ্গীর আলম বদর জায়গায় বসিয়ে দিয়েছে। আমার ভাগনে সম্পূর্ণ নির্দোষ একটা ছেলে, এটা আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি।’
তবে অ্যাটর্নি জেনারেলের দাবি, পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম ঠিক আছে, কিন্তু আমার জাহাঙ্গীর আলম সেই জাহাঙ্গীর আলম নাই এই তো? সেটা তো ওনাকে (কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীরকে) প্রমাণ করে দেখাতে হবে। আমরাও আদালতে দেখাব যে একই লোক।’
ভুল আসামির সব তথ্য প্রমাণ দেওয়ার পরও বিচারিক আদালত তা আমলে নেননি বলেও দাবি করেন কুষ্টিয়ার জাহাঙ্গীর আলমের আইনজীবী।
আরও পড়ুন: