হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার (৪.৪৬ কেজি) স্বর্ণের চালান আটক করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) শারজাহ থেকে আসা একটি ফ্লাইটের যাত্রীর কাছ থেকে এই সোনা জব্দ করা হয়। ওই যাত্রী তাঁর পরনে থাকা ১৬টি কাপড়ে বিশেষভাবে লুকিয়ে এই সোনা এনেছিলেন।
এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানায়, শারজাহ থেকে ঢাকায় আগত ইউএস বাংলা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে এক যাত্রী সোনা চোরাচালান করছেন মর্মে শুক্রবার সকালে সংবাদ পাওয়া যায়। সে পেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
বিমানটি অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে বোর্ডিং গেইট, ট্রানজিট পয়েন্ট, গ্রিন চ্যানেলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক অবস্থান গ্রহণ করা হয়। সন্দেহভাজন যাত্রী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে সকাল সাড়ে ৯টায় গ্রিন চ্যানেলের স্ক্যানিং মেশিন অতিক্রম করার পর তাঁকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর টিমের সদস্যরা চিহ্নিত করে কাছে স্বর্ণলংকার/স্বর্ণবার/স্বর্ণজাতীয় কোনো কিছু আছে কিনা জিজ্ঞাসা করেন।
ওই সময় শহীদ মিয়া স্বীকার করেন, তাঁর কাছে ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাঁর কাছে ৩০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়। তাঁর কাছে আর কোনো স্বর্ণ থাকার কথা অস্বীকার করায় তাঁকে আর্চওয়ে করানো হয় এবং পরনে অত্যধিক জামাকাপড়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যাত্রীর জামাকাপড়ের ওজন অস্বাভাবিক পরিলক্ষিত হওয়ায় এগুলো খুলে স্ক্যানিং মেশিনে স্ক্যান করা হয়।
জামাকাপড়ের মধ্যে বিশেষভাবে লুকায়িত স্বর্ণের ইমেজের অস্তিত্ব পাওয়া গেলে যাত্রীকে কাস্টমস হলে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীতে স্বর্ণের পরিমাণ নির্ণয়ের লক্ষ্যে শহীদের শরীরে পরিহিত ১৬ পিস কাপড় (যার মধ্যে শর্ট প্যান্ট ৯টি, স্যান্ডো গেঞ্জি ৬টি ও ফুল প্যান্ট ১টি) স্থানীয় স্বর্ণকার কর্তৃক যাত্রী ও বিমানবন্দরে দায়িত্বরত বিভিন্ন সংস্থার উপস্থিতিতে বিমানবন্দরের ক্যানোপি-১ এ নিয়ে পোড়ানো হয়।
পোড়ানোর পরে অপরিশোধিত ৪,৪৬২ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়। প্রাপ্ত মোট স্বর্ণের পরিমাণ ৪,৪৯২ গ্রাম (৪৪৬২ গ্রাম অপরিশোধিত স্বর্ণ ও ৩০ গ্রামে অলংকারসহ)। এ স্বর্ণের আনুমানিক বাজারমূল্য ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যাত্রীকে আটকের পর বিমানবন্দর থানায় ফৌজদারি মামলা করা হয়।