ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প। নষ্ট হচ্ছে এ পরিবেশ। লেকে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। চুরি হয়েছে সড়ক বাতি। ভেঙে গেছে ওয়াকওয়ে। এ অবস্থার জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষককে (রাজউক) দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রকল্পটির দায়িত্ব রাজউকের কাছ থেকে সরিয়ে সিটি করপোরেশনকে দিতে বলছেন নগরবিদেরা। তবে রাউজকের দাবি, তদারকির কাজ নিয়মিতই চলছে। রক্ষণাবেক্ষণের সাড়ে ৯ কোটি টাকার সাড়ে ৪ কোটিই দিচ্ছেন তারা।
রাজধানীর হাতিরঝিল। বুকভরে একটু নিঃশ্বাস নিতে এখানে আসেন নগরবাসী। নাগরিক কোলাহল থেকে খোঁজেন খানিকটা স্বস্তি।
তবে সম্প্রতি হারিয়েছে সেই জৌলুস। পরিণত হয়েছে যেন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে।
ল্যাম্পপোস্ট আছে, চুরি হয়ে গেছে সড়কবাতি। ভেঙে গেছে ওয়াকওয়ে। ফোয়ারাটি নষ্ট অনেক দিন। সন্ধ্যার পর বসে মাদকের আড্ডা। প্রায়ই ঘটছে ছিনতাই। লেকে মিলছে মরদেহও।
হাতিরঝিলের এক পথচারী জানান, সকাল বেলা দেখা যায় বখাটেরা আড্ডা দেয়। অফিসে যাওয়ার সময় গাঁজার গন্ধে পেট ফুলে যায়।
আরেক পথচারী জানান, এখানকার কিছু জায়গা নোংরা। সেখান থেকে অনেক দুর্গন্ধ আসে।
আর এর কারণ হিসেবে রাজউককে দুষছেন নগরবিদরা। বলছেন, তাদের অক্ষমতার কারণেই এই অবস্থা। তাই এর দায়িত্ব দিতে বলছে সিটি করপোরেশনকে।
নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের দেখভাল করার সিস্টেমেটিক কাঠামো রয়েছে। এই কাঠামো রাজউকের নাই। যতই বাগড়াম্বর করুক এমন কাঠামো না থাকলে এই ধরনের প্রকল্পের দায়িত্বভার তার নেওয়া উচিত না।’
তবে রাজউকের দাবি, হাতিরঝিলের পরিবেশ ঠিক রাখতে নিয়মিত কাজ করছেন তারা। এরই মধ্যে সংরক্ষিত করা হয়েছে কিছু জায়গায়, দ্রুতই ঠিক হবে ওয়াকওয়ে।
রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ খন্দকার বলেন, ‘এখানে আদালতের একটা রায় আছে। সেটা মেনেই আমরা হাতিরঝিলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখব। সিটি করপোরেশনের কাছে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে আমার মতামত দেওয়ার কিছু নেই।’
রাজউক বলছে, হাতিরঝিল রক্ষণাবেক্ষণে বছরে খরচ প্রায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা। দোকানপাট, পরিবহন ও অন্যান্য খাত থেকে বছরে আসে পাঁচ কোটি আর বাকি সাড়ে চার কোটি দিচ্ছেন তারা।