নতুন বছরের আনন্দ ছুঁয়েছে কারাগারে। আনন্দ র্যালি করেছেন কারাবন্দিরাও। বছরের প্রথম দিনে পাতে ছিল পান্তা-ইলিশ। দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন স্বজনরাও। দেশের ৬৮টি কারাগারেই ছিল নানা আয়োজন।
কারাগারে নেমেছে বৈশাখ। বছরজুড়ে থাকা বিষাদ নেই আজ। বাদ্য-বাজনায় বরণ নতুন বছর।
জেলের মাছ ধরা জাল, কৃষকের লাঙ্গল-জোয়াল আর বাউল গানের দল। এ যেন একখণ্ড গ্রামীণ জনপদ। বাদ যায়নি ঘোড়ার গাড়ি। পালকির সাজ। কে বলবে, এই র্যালি কারাগারের ভেতর?
একজন কারাবন্দি বলেন, ‘সবার জন্য নববর্ষ সমান আনন্দ বয়ে নিয়ে আসুক। এটাই একমাত্র অনুষ্ঠান যেখানে সব ধর্মের মানুষ আমরা এক সাথে আনন্দ করতে পারি। নববর্ষের আনন্দ সারাদেশে ছড়িয়ে যাক।’
পুরো কারাগারেই নববর্ষের আবহ। সাজানো হয়েছে তোরণ-ব্যানারে। বন্দীদের স্বজনরা সকাল থেকেই ভিড় করেন কারাগারের প্রধান ফটকে। শিশুদের দেওয়া হয় বৈশাখি হাতপাখা, চরকি, টুপি, বেলুন, ভুভুজেলা। বড়দের জন্য ছিল ওয়েলকাম ড্রিংস। সেসব নিয়ে বন্দীদের সঙ্গে দেখা করেন স্বজনরা।
একজন দর্শনার্থী বলেন, ‘অন্যান্য দিন আমাদের এভাবে সম্মান জানায় না। আজকে একটা বিশেষ দিন। আমাদেরকে যে আপ্যায়ন, যে সংবর্ধনা দিয়েছে গেটে এটা অনেক ভালো লেগেছে।’
কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ৮ হাজার। নতুন বছরের সকালে দেওয়া হয় পান্তা-ইলিশ। দুপুর রাতে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা। বন্দীদের অংশগ্রহণে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আনন্দ র্যালিও করেন তারা।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার এ কে এম মাসুম বলেন, ‘বন্দিরা দেখুন, তারা চার দেয়ালের মাঝে। তারাও তো আমাদের মতোই। আমাদেরই বাবা, মা ভাই বোন, আমাদেরই অংশ তারা। সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে তো তাদেরকে ফেলে আমরা পারব না। তাদেরকে নিয়েই আমরা সামনের দিকে আগাবো। তাদেরকেও এই অনুভূতি দেওয়া যে, আমরাও আপনাদের সাথে আছি।’
সারা দেশের কারাগারে বর্তমানে বন্দী আছেন ৬৮ হাজার মানুষ।