ফরিদপুরে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে ৭ জন নিহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটির রির্পোট জমা দিয়েছে। এই দুর্ঘটনার পাঁচটি কারণ আর ১৪টি সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে কমিটি।
গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটি। অপরদিকে ওই বাস দুর্ঘটনায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলা হলে বাস চালক সুমন গাজীকে গ্রেপ্তার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
গত ৮ এপ্রিল জেলার সদর উপজেলার বাখুন্ডা এলাকায় শরিফ জুট মিলের সামনে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে ফরিদপুর গামী ফারাবী এক্সপ্রেস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে ৫ জন ও হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনসহ মোট ৭ জন নিহত হন ও ৩৩ জন আহত হন।
ঘটনার পরে জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিন্টু বিশ্বাসকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে পাঁচটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হলো- চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সের কোনো তথ্য না পাওয়া; চালকের বেপরোয়া গতিতে নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানো; ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং, ওভারটেকিং আইন অমান্য করা এবং সড়কে এ বিষয়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড না থাকা; ফিটনেস এবং ট্যাক্সটোকেন মেয়াদ উত্তীর্ণ অবস্থায় সড়কে চলাচল করা এবং দুর্ঘটনা কবলিত রাস্তাটি পার্শ্বসড়ক অংশে ঝুঁকিপূর্ণ সোল্ডার ড্রপ রয়েছে।
মহাসড়কে ফিটনেস, রুট পারমিট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ, দীর্ঘ যাত্রায় বিকল্প চালক রাখা, অবৈধ যান চলাচল নিষিদ্ধ করা, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় রাস্তার পাশে ট্রাফিক সাইন প্রদর্শন, পর্যাপ্ত সিগন্যাল, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, সকল যানবাহনে গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বসানো, ঝুঁকিপূর্ণ সোল্ড্রার ড্রপ মেরামত, অনুমোদনহীন পার্শ্বরাস্তা সংযোগ না দেয়া এবং রাইট অফ ওয়েতে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করাসহ দুর্ঘটনা নিরসনে ১৪টি সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, বিগত দিনের দুর্ঘটনায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ এবং এ ঘটনার কমিটির সুপারিশগুলো নিয়ে বাস মালিক, শ্রমিক, সড়ক বিভাগ, বিআরটিএ সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে দ্রুত সভা করা হবে। সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সভায় প্রত্যেক বিভাগকে আলাদা করে দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হবে।