রাজধানীতে জান্নাতুল ইসলাম (৩০) নামে এক গৃহবধূকে মুখে স্প্রে ছিটিয়ে হাত-পা বেঁধে অচেতন অবস্থায় সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাতিরঝিলের মগবাজারের আমবাগে নিজেদের বাড়ির তৃতীয় তলায় ঢুকে অজ্ঞাতনামা এক দুর্বৃত্ত এই চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।
ভুক্তভোগী জান্নাতুল ইসলাম ঢাকা মহানগর উত্তরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (চরমোনাই) অর্থ সম্পাদক রাকিবুল হাসানের স্ত্রী। তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ইসলামী আন্দোলন নেতা রাকিবুল হাসান দাবি করেন, ২৮৬/৪/এ নম্বর আমবাগ মগবাজার ছয় তলা নিজভবনের তৃতীয় তলায় তাঁর স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা হয়। পরে আজ বিকেলের দিকে অচেতন অবস্থায় স্ত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন।
রাকিবুল হাসান বলেন, ‘আজ দুপুরের দিকে আমি বাজার করার জন্য কাওরানবাজার এলাকায় গিয়েছিলাম। আমার ১৮ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে, সে বারান্দায় খেলা করছিল। বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে অজ্ঞাতপরিচয় এক দুর্বৃত্ত বাসায় এসে কেচি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আমার স্ত্রীকে বলে কোর্ট থেকে আমার (স্বামী) নামে উকিল নোটিশ আছে। স্বাক্ষর করে কাগজটা বুঝিয়ে দিতে হবে। তখন আমার স্ত্রী কেচি গেটের সামনে আসলে তাঁর মুখে স্প্রে জাতীয় পদার্থ ছিটালে আমার স্ত্রী দুর্বল হয়ে পড়ে। পরে ওই দুর্বৃত্ত কেচি গেট খুলে বাসায় ঢুকে আমার স্ত্রীর হাত-পা ও মুখে স্কচস্টেপ লাগিয়ে দেয়।’
ইসলামী আন্দোলন নেতা রাকিবুল আরও বলেন, ‘‘শুরুর দিকে আমার স্ত্রীর কিছুটা জ্ঞান ছিল। পরে তাকে টেনে–হেঁচড়ে রুমে নিয়ে দুর্বৃত্ত বলে– ‘তোকে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে হত্যা করে তোর স্বামীকে মামলায় ফাঁসাব। তোর স্বামী অনেক বাড় বেড়েছে।’ এ সময় আমার স্ত্রীর কাছ থেকে একটি আইফোন নিয়ে যেতে চায় এবং এর পাসওয়ার্ড জানতে চেয়েছে। তখন বাইরে থেকে ওই অজ্ঞাত দুর্বৃত্তের মোবাইলফোনে কল আসলে সে আমার স্ত্রীকে অচেতন অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায়।’
রাকিবুল হাসান বলেন, ‘পরে আমি বাসায় এসে আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। আমি রাজনীতির পাশাপাশি হজ যাত্রীদের জন্য একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করি। আমার ধারণা ওই দুর্বৃত্ত আমার স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যেই বাসায় এসেছিল। তবে সে বাসা থেকে কোনো কিছু নিয়ে যেতে পারেনি। শুধু কয়েকটি কাগজে আমার স্ত্রীর আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে গেছে।’
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, ‘আজ বিকেলের দিকে ওই গৃহবধূকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানিয়েছি।’