ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে নরসিংদী অঞ্চলে উৎপাদিত লটকন এবং মুন্সিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন পাতক্ষীর। আজ বুধবার বিকালে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর-এর উদ্যোগে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে এ দুটি পণ্যকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধূরী ও মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের হাতে স্বীকৃতির সনদ তুলে দেওয়া হয়।
নরসিংদী অঞ্চলে অমৃত সাগর কলার পর লটকন জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেল। লটকনকে বাংলাদেশের ৩২তম রেজিস্ট্রার্ড জিআই পণ্য হিসেবে উল্লেখ করে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। সুস্বাদু হওয়ায় দেশ-বিদেশে খ্যাতি পাওয়া নরসিংদীর উৎপাদিত লটকনকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গত বছর আবেদন করে জেলা প্রশাসন। গত বছরের ৬ মার্চ নরসিংদীর লটকনকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ‘ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩’ এর ধারা ১২ অনুসারে জিআই জার্নাল-৩১ নম্বরে প্রকাশ করা হয় এবং ৮ মার্চ তা ডিপিডিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এ ব্যাপারে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধূরী বলেন, ‘জিআই পণ্যের স্বীকৃতি লটকনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই ফলটি নরসিংদী জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী ফল এবং স্বাদে ও গন্ধে অন্য সব এলাকার লটকন হতে আলাদা। দীর্ঘদিন ধরেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নরসিংদী জেলায় লটকন চাষ হচ্ছে। জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে রপ্তানির সুযোগ বৃদ্ধিসহ লটকন স্থানীয় অর্থনীতিতে আরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর আগে, গত বছর জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হয় নরসিংদীর বিখ্যাত অমৃত সাগর কলাকে।’
এদিকে, মুন্সিগঞ্জ জেলা হতে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন পাতক্ষীরকে জিআই পণ্যের সনদ দেওয়া হয়। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত জানান, বহু প্রজন্ম ধরে স্থানীয় কারিগরদের নিপুণ হাতে তৈরি এই সুস্বাদু মিষ্টি মুন্সীগঞ্জবাসীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছে। দুধ, সামান্য হলুদগুড়া ও চিনি দিয়ে প্রস্তুত করা পাতক্ষীরের স্বাদ, গন্ধ ও গুণগত বৈশিষ্ট্য একে দেশের অন্যান্য মিষ্টান্ন থেকে স্বতন্ত্র করে তুলেছে। জিআই সনদপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে এই পণ্যের মান ও স্বাতন্ত্র্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেল, যা স্থানীয় উৎপাদকদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নিবন্ধিত ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ওবায়দুর রহমান।