২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ‘ডামি নির্বাচনের’ আয়োজন এবং ভোট চুরির অভিযোগে টাঙ্গাইলে ছাত্র-জনতার অভ্যুথ্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে
টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিমের ভূঞাপুর থানা আমলী আদালতে বিএনপি নেতা কামরুল হাসান এ মামলা করেন।
বিচারক রুমেলিয়া সিরাজাম মামলাটি আমলে নিয়ে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার বাদী কামরুল হাসান (৫৫) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে ও অলোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের তালিকায় আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আব্দুল আওয়াল, তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, দেশ টেলিভিশনের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি অভিজিৎ ঘোষ, ডিবিসির স্টাফ রিপোর্টার সোহেল তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য, প্রিজাইডিং অফিসার, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।
বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, ভারতের নির্দেশক্রমে শেখ হাসিনা অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করেন। বাদী কামরুল হাসান ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নের ভারই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। তিনি অন্য ভোটারদের সঙ্গে ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর হামলা চালায়। আসামিরা তাঁকে মারপিট করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিজাইডিং অফিসারের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে। এভাবে অন্যের ভোট চুরি করে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনিরকে এমপি পদে নির্বাচিত করা হয়। এতে দেশ ও জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু রায়হান খান বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করেন। পরে ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।