মানিকগঞ্জে চটকদার বিজ্ঞাপন দেখিয়ে হাজারো গ্রাহকের কাছ থেকে শতকোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও বুঝিয়ে দেয়া হয়নি প্লট। ধলেশ্বরী হাউজিং লিমিটেডের বিরুদ্ধে উঠেছে প্রতারণার এমন অভিযোগ। প্লট তো দূরের কথা, এখন পর্যন্ত প্রবেশ গেট ছাড়া কোনো অবকাঠামোই নির্মাণ হয়নি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে তদন্ত কোরে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রশাসনের।
জানা গেছে, দেড় দশক আগে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে কালিয়ানি ও তাঁতি কালিয়াটি মৌজার গজারির বিলের পরিত্যক্ত ডোবা ভরাট ও কিছু জমি নিয়ে গড়ে তোলা হয় ধলেশ্বরী হাউজিং। ২০১০ সালে এই হাউজিংয়ের প্রকল্প-১ থেকে চার শতাংশ জমি নেন প্রবাসী লুৎফর রহমানের স্ত্রী রিতু রহমান। এককালীন ১০ হাজার এবং ৪ হাজার টাকা কোরে মাসিক কিস্তি দেন। ২০২০ সালে পরিশোধ করেন কিস্তির ৫ লাখ টাকা। এরপর পাঁচ বছরেও বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি জমি।
গ্রাহকদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়েই কিস্তির টাকা শোধ করলেও, প্লট বুঝিয়ে দিতে টালবাহানা করছে হাউজিং কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ আছে জমি দখলেরও।
ভুক্তভোগী রিতু রহমান বলেন, ‘তারা আমাদের প্রজেক্ট বুঝে দিতেছে না। ধানাই-পানাই করতেছে অমুক বছরে দেওয়া হবে এতজন, তমুক বছরে এতডি, এরকম দেওয়া হবে।’
সিরাজুল ইসলাম নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘এইডার ভেতরে সরকারি খাস জমিও কিন্তু আছে। তারা খাস জমিসহ কিন্তু মাটি কেটে ফেটে পড়েছে।
এদিকে, ধলেশ্বরী হাউজিং কর্তৃপক্ষের দাবি, করোনার সময় প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যায়। এ বছরই ফের শুরুর আশ্বাস তাদের।
ধলেশ্বরী হাউজিং লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক সাইদুর রহমান সাঈদ বলেন, ‘আমরা যাদের সাথে জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি তাদের বলেছি যে আমরা ২০২৫ সালের দিকে ডেভেলপে গিয়ে প্লট আকারে সেগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার কাজ শিগগিরই করব।’
অভিযোগ রয়েছে, একসময় যুবক হাউজিংয়ে জড়িত ছিল এই চক্রটি। এদিকে, ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগের পরামর্শ দিয়েছে জেলা ডেভেলপার অ্যাসোসিয়েশন।
মানিকগঞ্জ ডেভেলপার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সাঈদ বলেন, ‘অনেকেই দলিল পেয়েছে। কিন্তু তাদের কেনা প্লটটা সেইটাও তারা জানেন না যে প্লটটা কোনটা। এখন হাতের আঙুল দিয়ে তো আর বুঝিয়ে দেওয়া যায় না যে ওই প্লটটা আপনার। এখন তারা যদি ওই হাতের আঙুল দিয়া বুঝায় দেয়, এটাতে তো আসলে খুশি হওয়ার কিছু নাই।’
বেসরকারি প্রকল্প হলেও, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস জেলা প্রশাসনের।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের কাছে অভিযোগ দেয় যে উনাদের সাথে এইভাবে অন্যায় করা হয়েছে, তাহলে আমরা এই বিষয়গুলো যারা দেখে তাদের কাছে অভিযোগগুলো জানিয়ে দেব।’