খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করেছেন। ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবি নিয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে এক দফা দিয়ে প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকেরা।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দুর্বার বাংলা’ ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি সম্বলিত পোস্টার সাঁটানো।
এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সেখ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা পুরো দেশবাসীকে বলতে চাই, আজ এই অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রদের পাশে না দাঁড়ালে তাদের ক্ষমতার কোনো ন্যায্যতা নাই। কোথায় আসিফ মাহমুদ? কোথায় মাহফুজ আলম? কোথায় শিক্ষা উপদেষ্টা? কোথায় আসিফ নজরুল, যিনি জুলাইয়ে রাজপথে নেমেছিলেন? আপনারা কি দেখছেন না কুয়েটের বুকে আবার জুলাই নেমেছে? হাসিনা আমলেও আন্দোলনকারীদের বহিষ্কার দেওয়ার মতো কথা কোনো ভিসি ভাবেনি। তাহলে এখনকার আমলের ভিসিদের স্বৈরাচারিতার দুঃসাহস কারা যোগাচ্ছে? আমরা ইন্টেরিমকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছি। গতকালে সারা দেশে কি হয়েছে দেখেন? আপনাদের হুঁশিয়ারি দিচ্ছি আপনারা আমাদের ভিসিকে অপসারণ করেন, শিক্ষার্থীদের ওপর বহিষ্কার এবং মামলা তুলে না দিলে, পরবর্তী জুলাই হবে আপনাদের বিরুদ্ধে।’
এ সময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছেন কুয়েট শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কর্মসূচি থেকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ সায়েদুল ইসলাম জানান, প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না তারা।
গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী ২ মে থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য সব আবাসিক হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এতে কুয়েটে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। হল ঘোষণার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন।