শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতীর মহারশি নদীর তীরের মানুষেরা নির্ঘুম রাত্রিযাপন করছে। টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর একাধিক স্থানে দেখা দিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাঁটল। যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে নদীর বাঁধ। এতে চরম ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বাড়িঘর, ফসল ও প্রতিষ্ঠান। যে কারণে বাঁধ পাহারা দিতে নির্ঘুম রাত্রিযাপন করছে নদী পাড়ের মানুষ।
ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের দীঘিরপাড় ফাজিল মাদরাসা এলাকায় নদীর পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় ভাঙতে পারে বাঁধ। এতে ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে দীঘিরপাড় ফাজিল মাদরাসা, মসজিদ, বাড়িঘর ও ফসল। যে কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন সারাদিন বাঁধে মাটি দেওয়াসহ ভাঙন ঠেকাতে কাজ করেন। গতকাল সারারাত পাহারা দেন এলাকাবাসী। রাত দেড়টার সময় দীঘিরপাড়ের মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা রাত জাইগা বাঁধ পাহারা দিতাছি। এলাকার মানুষ সবাই আছি।’
আজ সকালে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জিও ব্যাগ ফেলাসহ জরুরি কাজ শুরু করলেও জনবল সংকটে স্থানীয় বাসিন্দারাও বাঁধ রক্ষায় অংশ নেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহজাহান আলী আকন্দ বলেন, ‘তিন বছর ধরে ভাঙন হলেও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা হয়নি। এবার বাঁধ ভেঙে গেলে বাড়িঘর, ফসলি জমি ও ফাজিল মাদরাসা তলিয়ে যাবে। গত বছরও বাঁধ ভেঙে আমাদের এলাকার বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখানে স্থায়ী বাঁধ না করা হলে ফাজিল মাদ্রাসা ও মসজিদ টিকিয়ে রাখা যাবে না।’
স্বেচ্ছাসেবক মহসিন আলী বলেন, ‘প্রতি বছরই বাঁধে মাটি ফেলে কাজ করি। তবে একটি টেকসই সমাধান ছাড়া এই দুর্ভোগ যাবে না।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘বাঁধে কিছুটা ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। আমরা সর্বদা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’