সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট থেকে ধীরে ধীরে পানি সরে যাচ্ছে, ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষত। এদিকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে বন্যা কবলিত মানুষজন। বন্যার পানি সরে যাওয়ায় মানুষের মাঝে স্বস্তি দেখা দিলেও তারা এখনও দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ায় অনিশ্চিত ভাবনা ভর করেছে তাদের মনে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাছননগর এলাকার বাসিন্দা প্রতিবন্ধী খোদেজা খাতুন। ভিক্ষাবৃত্তি করেই সংসার চালান তিনি। তিন সন্তান ও স্বামী নিয়ে বসবাস করতেন কাঁচা ঘরে। খোদেজা বেগমের স্বামী ও এক ছেলে তিন জনই প্রতিবন্ধী। দুজন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। চলতি বন্যায় তাদের থাকার কাঁচা ঘরে ঢুকেছে বন্যার পানি। ঘর হারিয়ে এখন কোনো উপায় পাচ্ছেন না খোদেজা খাতুন, আশ্রয় নিয়েছেন সুনামগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউটে। ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও ঘর বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় কবে আবার নিজ ঘরে ফিরতে পারবেন নিজেও বলতে পারছেন না। খোদেজা বেগমের মতো এমন আরও দেড় শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে হাছননগর এলাকার।
সুনামগঞ্জে ১৬ জুন থেকে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অসংখ্য ঘরবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। শুরুর দিকে সদর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা বন্যা কবলিত হলেও পরে জেলার সব উপজেলা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। ছয় দিন ধরে মানুষ দুর্ভোগে আছেন। সুনামগঞ্জ শহরের বেশ কিছু এলাকায় এখনও অনেক মানুষের বসতঘরে পানি আছে। পানি আছে শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় যেখানে এখনও নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে মানুষের।
একমাত্র সরকারি সহায়তা ছাড়া এ বন্যার ক্ষতি কাটিয়া ওঠার আশা নেই সুনামগঞ্জবাসীর। বন্যায় একদিকে বসতভিটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে খাবার সংকট।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানালেন, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এটা চলমান থাকবে। আর বসতভিটা যাদের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করে পুনর্বাসনের আওতায় আনা হবে।