আগামী জুনের পর তথ্য প্রযুক্তি খাতের আয়করে অব্যাহতি সুবিধা নাও বাড়তে পারে। দাতা সংস্থা আইএমএফের চাপে এ খাতের ২৭ ধরনের সেবার ওপর করপোরেট কর বসাতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করহার নির্ধারণে পর্যালোচনাও করছে সংস্থাটি। উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা, কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিল হলে, থেমে যাবে তথ্য প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতি।
২০০৯ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রুপকল্প ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। সেই লক্ষ্য পূরণে আইটি খাতের বিকাশে নানা নীতি গ্রহণ করে সরকার। যার অন্যতম, আইটি কোম্পানিকে আয়কর থেকে অব্যাহতি দেওয়া। দফায় দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয় এ সুবিধার। তালিকায় একে একে যুক্ত হয় সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, আইটি ফ্রিল্যান্সিংসহ ২৭ ধরনের সেবা। এই অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুনে।
সম্প্রতি আয়কর বিভাগের সংস্কারে এনবিআরের সঙ্গে দীর্ঘ পর্যালোচনা করে আইএমএফ। কর আদায় বাড়াতে বিভিন্ন খাতে দেওয়া ছাড় কমিয়ে আনার পরামর্শ দেয় আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাটি। আলোচনায় ছিল তথ্য প্রযুক্তি খাতও। যেহেতু এখাতের অব্যাহতি শেষ হচ্ছে, নতুন করে মেয়াদ না বাড়ানোর পরামর্শ দেয় আইএমএফ। এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাবও দেখায় এনবিআর।
গবেষণা সংস্থা পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘প্রত্যেকটা এক্সেমশনের একটা সানসেট ক্লজ রাখতে হবে। আমি যদি অলরেডি ১০–১৫ বছর দিয়ে থাকি তাহলে আর দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নাই। আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স নিয়ে কেউ কাজ করছে বা কেউ চিপস বানানোর চেষ্টা করছে নতুন কিছু নিয়ে আসতেছে। তাদেরকে আমরা উৎসাহিত করব।’
দেশে তথ্য প্রযুক্তি খাতের বার্ষিক ব্যবসার পরিমাণ প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। বছরে আইটি সেবা রপ্তানি দুই বিলিয়ন ডলার ছুঁইছুঁই করছে। পাশাপাশি এ খাতে বাড়ছে বিদেশি বিনিয়োগ। উদ্যোক্তাদের আশঙ্কা, কর অব্যাহতি তুলে নেয়া হলেও তিন ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা।
বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, ‘একটা সেক্টরের ২ হাজার–৩ হাজার ইনডিভিজ্যুয়াল প্রতিষ্ঠানের জন্য কর অব্যাহতি না। এটা আসলে সমগ্র দেশের উন্নয়নে কাজে লাগবে। অবশ্যই এক্সটেনশন চাচ্ছি। ইটস ভেরি ক্লিয়ার কমিউনিকেশন। এবং সেটা কমপক্ষে ২০৩১ সাল পর্যন্ত।’
অব্যাহতি উঠে গেলে আইটি কোম্পানির করপোরেট কর হবে সাড়ে ২৭ শতাংশ। তবে শুরুতে কম হারে কর নির্ধারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন এনবিআর কর্মকর্তারা।