গ্যাস বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান তিতাসের সিস্টেম লস এখনো প্রায় ৮ শতাংশ। শিল্প ও আবাসিক সংযোগে চুরি আর পুরান পাইপলাইনে এ অপচয় হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জবাবদিহি না থাকায় রাষ্ট্রীয় মূল্যবান সম্পদের পুরো সুফল মিলছে না। যদিও পেট্রোবাংলার দাবি, সিস্টেম লস শনাক্তে সঞ্চালন লাইন ও এলাকাভিত্তিক বিতরণ পয়েন্টে মিটার বসেছে। আর তিতাস বলছে, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নে চলছে সাঁড়াশি অভিযান।
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে ১৩ হাজার কিলোমিটার পাইপলাইনে গ্যাস বিতরণ করে তিতাস। তাদের প্রায় ২৯ লাখ গ্রাহকের সাড়ে ২৮ লাখই আবাসিক। বাকিগুলো শিল্প, বাণিজ্য, বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, সিএনজি স্টেশন ও অন্যান্য সংযোগ।দিনে প্রায় ১ হাজার ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বিতরণ করে তিতাস। যার ৬ থেকে ৮ ভাগই সিস্টেম লস। এ গ্যাসে প্রায় ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) শুনানি বন্ধ করায় জবাবদিহিতা নেই তিতাসের। যদিও তা মানতে নারাজ পেট্রোবাংলা।
বিইআরসির সাবেক সদস্য মকবুল-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘এটা হচ্ছে যে হোল তিতাসের সিস্টেমের মধ্যে ভুল। এটা শুধু সিস্টেম না, একেবারে ওপর পর্যন্ত। তারা এতটুকু সাহস দেখায় কারণ তাদের পেছনে বিশাল ক্ষমতা।’
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘কোম্পানিতো মেপে নেবেই। কোম্পানি আবার জোনে ভাগ করে দেবে, জোন উপ–জোনে ভাগ করবে। প্রত্যেক জায়গায় মিটার থাকবে। জিএম, ডিজিএম প্রত্যেকে লায়াবল থাকবে, কোনটা কোথায় কতটা আছে। আমি তো সিস্টেম দাঁড় করিয়েছি।’
তিতাস বলছে, সিস্টেম লসের মূল কারণ শিল্প ও আবাসিক সংযোগে চুরি আর পুরান পাইপলাইনের লিকেজ। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, আড়াই বছরে ৮ লাখের বেশি অবৈধ আবাসিক, শিল্প, বাণিজ্যিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে তারা। সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্ বলেন, ‘ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জসহ শহরগুলোতে যে ভার্টিকাল এক্সপেনশন সেগুলো ছাড়া আমাদের কাছে কোনো চ্যালেঞ্জ নাই, সিস্টেম লসের। এটা চুরির সিস্টেম লস। তবে সিস্টেম লস কিন্তু শুধু চুরিই নয়। একটু প্রেসার বেশি দিলে কিছু পাইপলাইনে গ্যাস বের হয়। এগুলোও আমাদের সিস্টেম লসের অন্যতম কারণ।’
পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস টানা ৫ অর্থবছর মুনাফা করলেও গত অর্থবছরের ৯ মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান করেছে ১ টাকা ৬৭ পয়সা।