সাড়ে ৩ মাস পর সামিটের এলএনজি টার্মিনাল সচল হলেও, কাটেনি গ্যাস সংকট। খোলাবাজারের এলএনজি না আসায়, জাতীয় গ্রিডে বাড়েনি গ্যাসের সরবরাহ। এতে সিএনজি স্টেশনে চাহিদা মত গ্যাস মিলছে না। টেক্সটাইল শিল্পের উৎপাদনও কমেছে ৪০ ভাগ পর্যন্ত। বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস বলছে, গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরো কমপক্ষে ১০ দিন সময় লাগবে।
রাজধানীর সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস কিনতে সকাল থেকেই দীর্ঘ সারিতে অপেক্ষা করতে দেখা যায় গাড়ি চালকদের। তাদের অভিযোগ, কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর গ্যাস মিললেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। গাড়িচালকদের অভিযোগ, প্রায় ৪ মাস ধরে বেড়েছে তাদের ভোগান্তি।
অপেক্ষমাণ একজন গাড়ি চালক বলেন, ‘কোনো জায়গায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না। আর পাওয়া গেলেও যতটুকু পাওয়ার কথা অতটুকু পাই না। প্রেসার না থাকলে, আমাদের তো ৯০০ টাকার গ্যাস ঢোকে দেখা যায়, ২০০–৩০০ টাকার পাওয়া যায়। গাড়ির চাপ বেশি, গ্যাসের চাপ কম।’
গ্যাসের চাপ কম থাকায় টেক্সটাইল, সিরামিকসহ বিভিন্ন শিল্পের উৎপাদনও কমছে। বন্ধ রাখতে হচ্ছে কিছু ইউনিট। এতে সময়মতো পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় রপ্তানি বাজার হারানোর শঙ্কা উদ্যোক্তাদের।
বিটিএমএ পরিচালক রাজীব হায়দার বলেন, ‘এখন ৩০ থেকে ৪০ ভাগ উৎপাদন আমাদের নাই। এর কারণ গ্যাসের চাপ কম এবং সরবরাহও কম। যখন গ্যাসের ঘাটতি থাকে তখন কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনও চাহিদা অনুযায়ী হয় না। যে-সব ফ্যাক্টরি বিদ্যুৎ দিয়ে চলছে তাদেরও একই অবস্থা হচ্ছে। বায়ার যেহেতু সময় মতো প্রোডাক্টটা পাচ্ছে না, সে তার অর্ডারটা এ দেশ থেকে সরিয়ে তৃতীয় বা ভিন্ন কোনো দেশে নেওয়ার অপশনটা খুঁজবে।’
স্থানীয় ২০০ কোটি ঘনফুট ও আমদানির এলএনজিতে ১১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ ছিল। মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে সামিটের এফএসআরইউ অচল হয়ে যায়। এতে গ্যাস সরবরাহ নামে ২৬০ কোটি ঘনফুটে। ১১ সেপ্টেম্বর টার্মিনালটি সচল হলেও, এলএনজি সরবরাহ বাড়েনি।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের মহাব্যবস্থাপক কাজী মো. সাইদুল হাসান বলেন, ‘যে এফএসআরইউটা ড্যামেজ হয়েছিল, সেটা এখন কার্যক্ষম হয়েছে। আমাদের স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আসার যে বিষয়টা সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট চেষ্টা করছে। আশা করছি সপ্তাহখানেক বা ১০ দিনের মধ্যে এটা নতুন ভ্যাসেল এনে গ্যাস সাপ্লাই দিতে পারবে।’
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জসহ তিতাসের অধীনে থাকা এলাকাগুলোতে দৈনিক চাহিদা কমপক্ষে ২০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। গড়ে মিলছে মাত্র ১৪০ কোটি ঘনফুট।