সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির ফলে দেশে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান কমবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী নেতারা। নীতি সুদহার না কমানোয় ক্ষোভ জানান তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি বাজার তদারকিতে জোর দেওয়ার তাগিদ তাদের।
নিত্যপণ্যের উচ্চ দামে দিশেহারা স্বল্প আয়ের মানুষ। উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক তিন দফায় নীতিসুদ হার বাড়ালেও মূল্যস্ফীতি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমেনি।
উল্টো নতুন করে শতাধিক পণ্যে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। এতে করে জীবন যাত্রার খরচ বেড়েছে আরেক দফা। আমদানি নির্ভর বাংলাদেশে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল না হলে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
এমন অবস্থায় আবারো সংকোচন মূলক মুদ্রানীতি দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। জুন নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৮ ভাগের নিচে আসবে বলেও আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের। যদিও, শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না বলে মত বিশ্লেষকদের।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আমাদের দেশে মুদ্রানীতিটা এককভাবে কাজ করে না। এখানে আর্থিক নীতি অর্থাৎ ফিসক্যাল পলিসি সেটাও পাশাপাশি সংকোচনমূলক হতে হবে।’
গবেষণা সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘মূল ফোকাসটা এখন মূল্যস্ফীতিতে আছে, এটা যদি জরুরি ভিত্তিতে না কমে তাহলে হয়ত নীতিহার কমবে না। এর ওপর নির্ভর করে আমার ব্যক্তিখাতের ঋণপ্রবাহ কোথায় যাবে সেটা হয়ত স্থির করা হবে। সুতরাং এখনকার প্রবৃদ্ধি সামনে বাড়বে কিনা সেটা নিয়ে আমার কিছুটা সন্দেহ আছে।’
সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা কমলেও, বেড়ে যাবে সুদের হার ও উৎপাদন খরচ। বেসরকারি খাতে অর্থের প্রবাহ কমলে, ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘প্রতিটি খাদ্যপণ্য আমদানিনির্ভর, এখানে যদি সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ফলো করেন তাহলে কিন্তু আমি মনে করি সমস্যা কমার চেয়ে, বাড়বে। বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে, সমস্যাটা হলো যখন বিনিয়োগ কমে যায় তখন কি দাঁড়ায়? কর্মসংস্থান হচ্ছে না।’
ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন, জোগান ও সরবরাহে জোরের পরামর্শ বিশ্লেষকদের। এছাড়া, স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিতের তাগিদ তাদের।