জামালপুরের মাদারগঞ্জে শুরু হয়েছে গ্যাসের অনুসন্ধান। গ্যাসের উপস্থিতি নিয়ে অনেকটাই আশাবাদী বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। প্রত্যাশা অনুযায়ী গ্যাস মিললে এ কূপ থেকে দৈনিক গড়ে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব। এখান থেকে উত্তোলন করা গ্যাসের বাজার মূল্য হবে প্রায় ১৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলা বলছে, এই কূপ থেকে উত্তোলন শুরু হরে সর্বপ্রথম গ্যাস পাবে যমুনা সার কারখানায়।
জামালপুরের মাদারগঞ্জের তারতাপাড়া গ্রামে সাইসমিক উপাত্তে গ্যাসের উপস্থিতি পায় বাপেক্স ১৯৮০ সালে। এর পর কেটেছে ৪৪ বছর। কয়েকবার সাইসমিক উপাত্ত ও ক্লোজ গ্রিড সাইসমিক সার্ভে করে বাপেক্স। উপাত্ত বিশ্লেষণে গত ২৪ জানুয়ারি জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন কার্যক্রম শুরু করে বাপেক্স।
জামালপুর-১ অনুসন্ধান কূপ খনন প্রকল্পের পরিচালক মোজাম্মেল হক বলেন, বিভিন্ন জটিলতার কারণে আর সার্ভে করার পরে সার্ভের রিপোর্টগুলো অ্যানালাইসিস করতে অনেক সময় লাগে। অ্যানালাইসিসের পরে তারা যদি মেনশন করে দেয়। তার পরে যদি মেনশন করে যে এই জায়গায় পাব। তার জন্য এখানে সময় লাগতে পারে।’
দীর্ঘ দিনের প্রতীক্ষার পর গ্যাসের অনুসন্ধান শুরু হওয়ায় আনন্দিত স্থানীয়রা। দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধি হওয়ার পাশাপাশি এই প্রকল্পের মাধ্যমে সৃষ্টি হবে নতুন কর্মসংস্থানের এমনটাই আশা তাদের।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা খুশি। এই কূপ খননের ফলে জাতীয় অর্থনীতিতে এই খনিজ সম্পদ যুক্ত হবে। এই জন্য দেশ এগিয়ে যাবে। এই প্রত্যাশা রাখি। পাশাপাশি আমাদের এই এলাকায় যে যে লোক যে যে জায়গায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ আছে। তাদের সে সে জায়গায় সম্পৃক্ত করতে হবে।’
আরেক স্থানীয় বলেন, ‘আমাদের এখানে একটা গ্যাস কূপ খনন করা হয়েছে, উদ্বোধন করা হয়েছে। এ জন্য আমরা অনেক গর্বিত। আমরা আশা রাখি। আমাদের এখানে যারা আছে যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের চাকরির ব্যবস্থা করবে। সামনের আরও কার্যক্রমে আমরা সহযোগিতা করব বলে বিশ্বাস করি।’
এই প্রকল্পে গ্যাসের উপস্থিতির বিষয়ে অনেকটাই আশাবাদী বাপেক্স। আর এখানে গ্যাস পাওয়া গেলে যমুনার ওই পাড়েও গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার আশা পেট্রোবাংলা।
বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব বলেন, ‘প্রথমবার আমরা গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়ার পর ক্লোজ গ্রিড আরেকটা সার্ভে করেছি। ক্লোজ গ্রিড সার্ভে করাতে আমরা এখানে উপস্থিতি পেয়েছি। এটা মাটির নিচের যেহেতু বিষয়। আমরা এটা অ্যানালাইসিস করে যে ইনডিকেশনটি পেয়েছি। তার পরেই কিন্তু আমরা এখানে ড্রিলিং করি।’
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করছি যে যমুনার এই পাশটাতে যদি গ্যাস পেয়ে যাই। তাহলে অন্যপাশেও পাব। এই আশাটা আমাদের প্রকট হবে। এটাতে অনুসন্ধান কূপ খনন করছি। এর পরে আমরা আশপাশে আরও অনেকগুলো উন্নয়ন কূপ খনন করব। যেন আমাদের প্রোডাকশনটা আরও বাড়তে পারে। এটাকে ব্যাস করে আমরা আরও এলাকা নেব, আশপাশে।’
তিন মাস মেয়াদী প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৮ কোটি টাকা। আর তিন হাজার মিটার খননের পর ৪০০ বিসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন যুক্ত হবে ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।