অতীতে সামাজিক সুরক্ষা খাতে অতিরঞ্জিত ব্যয় দেখানো হয়েছে। এ খাতের ব্যয় জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ। বেসরকারি সংস্থা র্যাপিডের এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে আসে। রাজধানীতে সিপিডির দুই দিনের সম্মেলনে সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে সমাজ কল্যান উপদেষ্টা বলেন, এ খাতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা লোক দেখানো। এর সুষম বন্টনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বয়স্ক, বিধবা ভাতা সহ দেশের সামাজিক সুরক্ষা খাতে ১৪০ টি কর্মসূচি চালু রয়েছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান র্যাপিডের এক গবেষণায় উঠে আসে, ৬ টি বড় স্কিমের মধ্যে শুধুমাত্র বয়স্ক ভাতাই প্রকৃত সামাজিক সুরক্ষা খাত হিসাবে বিবেচিত।
র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, ‘যত বেশি প্রোগ্রাম তত বেশি কর্মকর্তাদের দড়াদড়ি, তত বেশি দুর্নীতির দৌরাত্ব, তত বেশি জবাবদিহিতার অভাব। একটা প্রোগ্রামে আমরা খরচ করি ২৭ শতাংশ। সেটা সরকারি কর্মকর্তদের পেনশন। সামাজিক সুরক্ষা খাতের উদ্দেশ্য হচ্ছে দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করা, কিন্তু সেটা আসলে না।’
বক্তারা বলেন, সামাজিক সুরক্ষা খাতের বন্টনে দুর্নীতি এড়াতে বেশি প্রোগ্রাম না নিয়ে ১৫-২০টি করা যেতে পারে। যেখানে বাড়বে সুবিধাভোগীর সংখ্যা, অপচয় হবে না সরকারি অর্থের।
ড. এম এ রাজ্জাক বলেন, ‘এই যে একবার দেওয়া শুরু করেছে ৬০০ টাকা সেটা যে কোন জনমে পরিবর্তন হবে তার ঠিক নেই। প্রত্যক বছর মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এগুলো যেহেতু বাড়ে নাই, এই সব ভাতার কিন্তু প্রকৃত মূল্য কমে যাচ্ছে।’
আলোচনায় সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সামাজিক সুরক্ষা খাতে যে বরাদ্দ দেয়া হয়, তা অতি নগন্য এবং লোক দেখানো।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘এই প্রহসনটা অত্যন্ত রাজনৈতিক। কারণ আমাকে একটা সংখ্যা দেখাতে হবে। আমি যখন মাইক্রোফনের সামনে দাঁড়ায়, একজন রাজনৈতিককে বলতে হয়, আমি এই টাকাটা এতো মানুষকে দিয়েছি। কিসের জন্য দারিদ্র বিমোচন করার জন্য। ওই টাকাটা অপমান করা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
গবেষণায় উঠে আসে, শহর এলাকায় ২০৩০ সালের মধ্যে সামজিক সুরক্ষা খাতে সুবিধাভোগীর সংখ্যা আরো ২০ শতাংশ বাড়বে। তাই এটি মাথায় রেখে আগামী বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।