গত বছরের তুলনায় এবার ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে বেশি। তবুও বাজারে তেলের সংকট কাটছে না। প্রশাসন বলছে, এ সংকট কৃত্রিম। সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারিত দামে তেল বিক্রির জন্য হুঁশিয়ারিও দিলেও, বাজারে কমেনি অস্থিরতা। এদিকে, ভোজ্যতেল ও সয়াবিন বীজ বোঝাই জাহাজ সাগরে ভাসিয়ে রেখে মজুতেরও অভিযোগ উঠেছে।
চলতি রমজানের আগে থেকে শুরু হয় বাজারে ভোজ্যতেল নিয়ে অস্থিরতা। বাড়তে থাকে দাম, খোলা বাজারে দেখা দেয় সংকট। দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জেও দেখা দেয় সংকট।
হিসাব বলছে, দেশে প্রতি মাসে সয়াবিনের চাহিদা থাকে গড়ে ৮৭ হাজার টন। রোজায় এই চাহিদা কিছুটা বাড়ে। তবে, গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে আমদানি করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টন তেল। যা আগের বছরের তুলনায় পাঁচ শতাংশ বেশি। এছাড়া আরো কিছু তেল জাহাজ থেকে খালাসের অপেক্ষায় আছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘৩ লাখ ৪২ হাজার ৫০০ মেট্রিকটনের মতো তেল গত শুধু জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি, এই দুই মাসে এসেছে। এর বাহিরেও আমাদের আউটার অ্যাঙ্করে যে বর্তমানে ৭টি জাহাজ আছে। এগুলোতে প্রায় ৮৪ হাজার মেট্রিকটন ভোজ্য তেল আছে। এগুলো পর্যাপ্ত। গতবারের সাথে যদি আমরা তুলনা করি তাহলে এবার ৪ থেকে ৫ ভাগ বেশি তেল এসেছে।’
আমদানিতে এমন রেকর্ডের পরও ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে খাতুনগঞ্জে। চাহিদার অর্ধেক তেলও মিলছে না বাজারে। একেবারে উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল।
একজন বিক্রেতা বলেন, ‘আমদানি যে বেশি হচ্ছে এটা তো আমরা বুঝতে পারছি না। এখানে যদি লোক আসত তাহলে আমরা বুঝতাম যে না ঠিক আছে তেল পাচ্ছি। এগুলো হলো সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেট করে তেল দিচ্ছে না বাজারে।’
এ অবস্থায় একাধিকবার ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করে অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেয় প্রশাসন।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আসল জায়গায় হাত না দিলে বাজারে ভোজ্যতেল সরবরাহে প্রভাব পড়বে না।
ব্যবসায়ী মো আরফান বলেন, ‘ডিলারের ওপরে যদি যায় তাহলে অবস্থা বুঝতে পারবে। একেবারে কোম্পানির কাছে যেতে হবে। বড় বড় কোম্পানি যেগুলো আছে সেখানে যেতে হবে। আমরা কেন পাচ্ছি না এটা ওখানে গেলেই বের হয়ে আসবে।’
চট্টগ্রাম সমুদ্রে সয়াবিন বীজ নিয়ে বেশ কিছু ছোট জাহাজ রয়েছে। যা সংকট নিরসনে কিছুটা সহায়তা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।