গত রমজানে দৈনিক ৫০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হলেও, এবার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাচ্ছেন গ্রাহকরা। কারণ বাড়তি চাহিদা মেটাতে আগে থেকেই পরিকল্পনামতো জ্বালানি আমদানিতে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ জোগানে সাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফল হলেও, টেকসই সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি অর্থসংস্থানের পরিকল্পনা জরুরি।
গত বছর মার্চের মাঝামাঝি শুরু হয় রমজান মাস। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, দিনের বেলায় সর্বোচ্চ ৫১৩ মেগাওয়াট লোডশেডিং ছিল ১৪ মার্চ। রাতে সর্বোচ্চ ছিল ৩০ মার্চ ৬৬৬ মেগাওয়াট। সেদিন সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল ১৩ হাজার ৩৫৩ মেগাওয়াট।
চলতি বছর রমজানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিকল্পনা নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এলএনজি, কয়লা, ফার্নেসওয়েল আমদানিতে অর্থের জোগান নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা। আশ্বাস দেন যান্ত্রিক ত্রুটি ছাড়া রমজানে লোডশেডিং হবে না।
চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে। তারপর চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়ালেও প্রায় পুরোটাই জোগান দেওয়া গেছে। আদানির কেন্দ্র থেকে সাড়ে ১ হাজার ৩০০ আর ভারতের অন্য উৎস থেকে আসছে প্রায় ১ হাজার মেগাওয়াট। বেড়েছে গ্যাস, কয়লা, তরল জ্বালানির বিদ্যুৎ উৎপাদন। তবে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বড় অঙ্কের বকেয়া নিয়ে শঙ্কায় বিশ্লেষকরা।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘রমজানের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি মাসে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে পারাটা এবং এভাবে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট করাটাকে আমরা আপাতভাবে ইতিবাচক দেখছি। তবে আমরা সিপিডির পক্ষ থেকে যে রিকোমেন্ডেশনটা দিয়েছি, এ ধরনের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট দীর্ঘদিনের জন্য সহায়ক কোনো উদ্যোগ নয়। সরকারকে দীর্ঘদিনের জন্য একটি ফিন্যানসিয়াল প্ল্যান বের করতে হবে।’
রমজানের শেষ দিনগুলোতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। লোডশেডিং মুক্ত রাখতে অতিরিক্ত উৎপাদনে সরকারের ওপর বাড়বে ভর্তুকির চাপ।