খেলাপি ঋণ আদায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিট পলিসি তেমন কাজে আসবে না বলে মনে করেন ব্যবসায়ী নেতারা। এর পুরোপুরি সুবিধা পেতে এককালীন শোধের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক মানের এক্সিট পলিসি চান তারা। তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তের আড়ালে এ সুবিধার কেউ যাতে অপব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে কঠোর হতে হবে।
খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে ব্যাংক খাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্যমতে, গেল ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকা। এমন বাস্তবতায় খেলাপি ঋণ পরিশোধে এক্সিট প্ল্যান চান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সম্প্রতি অনাদায়ী ঋণ আদায় বা এক্সিট সংক্রান্ত নীতিমালা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংকে। এতে বলা হয়, মোট ঋণের ৫ শতাংশ দিয়ে এক্সিট সুবিধা নিতে পারবেন খেলাপি হওয়া ব্যবসায়ীরা। আবেদনের দুই মাসের মধ্যেই তা নিষ্পত্তি করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, ‘আগের এক্সিট নীতিমালাগুলো ছিল এককালীন অন্যদিকে এবারের এক্সিট নীতিমালা হচ্ছে স্থায়ী। এই এক্সিট নীতিমালার সুবিধা যে কেউ নিতে পারেন। অনেকগুলো কোম্পানি এমন অবস্থায় গেছে যে, তারা আবার পুনরায় চালু করতে সক্ষম না।’
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সিট নীতিমালায় সন্তুষ্ট নয় ব্যবসায়ীরা। উন্নত দেশগুলোর সাথে মিল রেখে অর্থের পরিমাণ ও মেয়াদ নির্ধারণের দাবি তাদের।
বিসিআইয়ের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম বলেন, ‘বড় বিনিয়োগ যদি হয় তাহলে সেখানে দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এবং ১২ বছরে রি পেমেন্টের ব্যবস্থা করা এবং ১ বছরের মনিটরিংয়ের সময় দেওয়া হয়।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন নীতিমালার ব্যবহার করে কেউ যাতে অনৈতিক সুবিধা নিতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে।
সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান, ‘কিছু এক্সিট নীতিমালা দরকার যেটা ব্যবসার ক্ষেত্রে হোক আর ঋণের ক্ষেত্রে হোক। একই সাথে এটার অপব্যবহার করে টাকা পাচার করে নিয়ে যায় এবং দায় মুক্তি নিয়ে যায় সে বিষয়টা খেয়াল রাখতে হবে।’
বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এক্সিট পলিসির সময়সীমা তিন বছরের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ পর্যন্ত করার দাবি শিল্প উদ্যোক্তাদের।
শফিউল আলম সুজন, ইনডিপেনডেন্ট নিউজ, ঢাকা