প্রতিদিন ৪০০ জনকে ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্যতেল, খেজুর, চিনিসহ পাঁচটি পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। যদিও, দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর, পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন অনেকেই। আছে অনিয়মের অভিযোগও। ডিলাররা বলছেন, চাহিদার চেয়ে পণ্যের জোগান কম থাকায় এ অবস্থা। আপাতত পণ্যের বরাদ্দ না বাড়লেও, নতুন করে স্মার্টকার্ড দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে টিসিবি।
শনিবার সকাল থেকেই টিসিবির পণ্য নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন গৃহিণী তাসলিমা খাতুন। অসুস্থ স্বামী ও শিশু সন্তানকে বাসায় রেখে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাকে।
তাসলিমা বলেন, ‘পেছনের মানুষ, সামনে যারা নেয় তাদের আগে এসে দাঁড়ায়। এদের জন্য একদিনও পণ্য পাই না। গতকালও পাই নি। আজকেও চলে যেতে হচ্ছে। এখানে যদি কোনো নিয়ম শৃঙ্খলা থাকত তাহলে আমরা পণ্য পেতাম। কেউ ৩টা পায়, আর কেউ একটাও পায় না।’
তার মতো অনেকেই পণ্য না পেয়ে ফিরে গেছেন খালি হাতে। বাজারের চেয়ে প্রায় অর্ধেক দামে তেল, ছোলা, চিনি, ডাল পেতে প্রায়ই চলে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি। অন্যদিকে, দীর্ঘ অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত পণ্য পেয়ে খুশি কেউ কেউ।
একজন সুবিধাভোগী বলেন, ‘টাকা দিয়া নিতেও সারাদিন লাগে। প্রতিদিন কিলা–কুলি, ঘুসা–ঘুসি, মাথা ফাটে দুই চারজনের। ৫ দিন চেষ্টার পর আজকে পণ্য পেলাম।’
তবে ডিলাররা বলছেন, প্রয়োজনের তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় সবাইকে পণ্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।
একজন বিক্রেতা বলেন, ‘চাহিদা তো অনেক বেশি। ৪০০ জনের জন্য নিয়ে আসি, দেখা যায় মানুষ হয়েছে ১ হাজার–দেড় হাজার। তখন আমরা মাল দিতে না পারলে আমাদেরও অনেক হয়রানি করে।
টিসিবির কর্মকর্তারা জানান, রমজান উপলক্ষ্যে প্রতিটি ট্রাকে ২০০ জনের বদলে ৪০০ জনের পণ্য দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়াতে নতুন করে স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হচ্ছে।
টিসিবি মুখপাত্র হুমায়ুন কবির, ‘যদি সরকার মনে করে যে আরও সময় বৃদ্ধি প্রয়োজন, তাহলে হয়ত পরের মাসের দু চারদিন এক্সটেন্ড করতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি আইন শৃঙ্খলাবাহিনী আমাদের এই ট্রাক সেলের জায়গাগুলোতে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, কারণ আপনি যেটা বললেন যে এই বিশৃঙ্খলা কিন্তু ডিলারদের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।’
টিসিবির তথ্যমতে, ইতিমধ্যে দুই লাখ স্মার্টকার্ড স্থানীয় ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছানো হয়েছে। বাকি কার্ডও দ্রুততম সময়ের মধ্যে পৌঁছানো হবে।