আসন্ন বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে চাল ও ধানের নতুন দাম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কৃষক এবং ব্যবসায়ীরা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন অনেকেই। আবার সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে কৃষি অফিসে যোগাযোগ করছেন অনেক কৃষক।
আসন্ন বোরো মৌসুমে ৪৯ টাকায় চাল ও ৩৬ টাকা কেজি দরে ধান কিনবে সরকার। গত বছরের চেয়ে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৪ টাকা। তবে নওগাঁর চাষীরা বলছেন, উপকরণের দাম বাড়ায় নতুন দামেও লোকসান কমবে না।
জেলার একজন কৃষক বলেন, ‘১ হাজার ৪৪০ টাকা দাম, এটা সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু ১ হাজার ৫০০ টাকা হলে আমাদের একটু গায়ে গায়ে যায়।’
জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘ধান ও চালের যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, এটা সমন্বয় করা হোক। ধানের দাম ৩৬ টাকা হলে অবশ্যই চালের দাম ৫৫ টাকা হতে হবে।’
দিনাজপুরে আমন মৌসুমে ধান সংগ্রহের লক্ষ্য ছিল ১৭ হাজার ৯৯১ টন। কিন্তু সংগ্রহ হয় মাত্র ২ হাজার ৮০ টন। কৃষকরা বলছেন, সিন্ডিকেটের কারণে সরকারি গুদামে ধান দিতে আগ্রহ পান না তারা। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের তুলনায় চালের দাম বাড়েনি।
জেলার একজন কৃষক বলেন, ‘গোডাউনে তো ধানই দিতে পারি না। যদি দিতেও চাই তাহলে দেখা যায় যে নানা হয়রানির মুখে পড়তে হয়।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দাবি, ধানের দাম বাড়ায় লাভ হবে চাষির।
দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সুবীর নাথ চৌধুরী বলেন, ‘সরকার যে ধান ও চালের দাম নির্ধারণ করেছে, আমরা আশা করছি এতে কৃষক উপকৃত হবে এবং মিল মালিকরাও স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের উৎপাদিত চাল গুদামে সরবরাহ করতে পারবে।’
বগুড়ায়ও আমন মৌসুমে চাল ও ধানের সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি। সরকারের সাথে বাজারের দাম দেখে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলছেন কৃষকরা।
একজন কৃষক বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় যে ধান ভেজা, নিতে চায় না। আবার সেটা যদি ফিরিয়ে নিয়ে আসি তাহলে আমাদের খরচ বেড়ে যায়।’
কুষ্টিয়ার মিল মালিক ও চাষীরা সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে খুচরা বাজারে চালের দাম বাড়ার শঙ্কায় মিল মালিকরা।
একজন মিল মালিক বলেন, ‘সরকার ধানের দাম বৃদ্ধি করেছে, এটা আসলে কৃষকদের জন্য ভালো। আগে ছিল ৩৩ টাকা, এখন ৩৬ টাকা।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও ধানের দামে খুশি কৃষক। এরই মধ্যে কৃষি অফিসে অনেকে খোঁজখবর নিচ্ছেন।