আমেরিকার বাড়তি শুল্কারোপের পরিপ্রেক্ষিতে, মূল্যছাড় দাবি করছেন দেশটির পোশাক ক্রেতারা। স্থগিত করেছেন ক্রয়াদেশও। এতে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তারা অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলে দাবি বাংলাদেশের শিল্পমালিকদের।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীতে মতবিনিময় সভায় তারা এসব কথা জানান। সংকট মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতায় জোর দেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, স্থানীয় শিল্প উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বড় ধরনের শুল্কযুদ্ধ শুরু করেছেন। দেশটিতে বাংলাদেশ বছরে সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির বিপরীতে আমদানি করে ২ বিলিয়ন ডরারের পণ্য। এই সমীকরণে ৩৭ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিলেও ৯০ দিনের জন্য তা স্থগিত করে ১০ শতাংশ আরোপ করেছেন ট্রাম্প।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘সিপিডি আয়োজিত মতবিনিময়ে পোশাক শিল্প মালিকরা বলেন, একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বড় বাজার আমেরিকা। তাদের অভিযোগ, রপ্তানি বাজারটিতে যখন অনিশ্চয়তা, তখন সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত আসছে না।
ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘আমি এক মাস যখন সুতার জন্য ইন্ডিয়াতে অর্ডার দিলাম, আমি বড় উদ্যোক্তা হিসেবে ঠিক আছে, কিন্তু মাঝারি ব্যবসায়ীরা কি কলকাতা থেকে শিপিং খুঁজে আনবেন? এরপরে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি করল, কিন্তু গণশুনানিতে কেউ এটা সাপোর্ট করেনি।’
বিকেএমইএ-এর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক বলেন, ‘অনিশ্চয়তার কারণে আমরা বলছি যে এই ৯০ দিনে একটা সময় পেয়েছি। এই ৯০ দিনে একটা সমাধান আলাদা হবে বলে আমি মনে করি না।’
এসময় আলোচকরা বলেন, মার্কিন শুল্কনীতি শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্ব অর্থনীতিকেই দুষ্ট চক্রের মধ্যে ফেলবে। শিল্পমালিকদের পাশাপাশি শ্রমিকের জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার, নতুন রপ্তানি বাজার উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই ধরণের অনিশ্চিত যে ব্যবসায়ীক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এর ফলে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদটা আরো বেড়ে গেল। জাপানের সঙ্গে আমরা এফটিএ করছি, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ করার কথা চলছে, আরো অনেক দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এগুলোর গুরুত্ব কিন্তু আরো বেড়ে গেল।’
সভায় বক্তারা জানান, আমেরিকা প্রতি বছর বাংলাদেশি পণ্যে ১০০ কোটি ডলারের বেশি শুল্ক আদায় করে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে প্রায় ১৮ কোটি ডলার শুল্ক পায়।