২০২২-২৩ অর্থবছরে কর ফাঁকির কারণে আনুমানিক ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। যার অর্ধেকই করপোরেট কর ফাঁকি বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান–সিপিডি।
আজ সোমবার রাজধানীতে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। এসময় আলোচকরা জানান, দুর্নীতি কমানো না গেলে রাজস্ব খাতে সংস্কারের সুফল পাওয়া যাবে না।
দেশের মোট রাজস্বে কর্পোরেট আয়করের অবদান ধারাবিহিকভাবে কিছুটা বেড়েছে। ২০০০ থেকে ২০১০ সালে কর্পোরেট আয়কর এর অংশ ১৫ শতাংশের নিচে ছিল। যা, ২০১৫ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২৫ শতাংশে।
সিপিডির গবেষণায় অংশ নেওয়া ৪৫ শতাংশ কোম্পানি জানিয়েছে, করপোরেট কর দেওয়ার সময় কর কর্মকর্তারা ঘুষ চেয়েছেন। এ ছাড়া বিদ্যমান কর হার অন্যায্য বলে দাবি করেছে ৮২ শতাংশ কোম্পানি। সিপিডির গবেষণা বলছে, ২০১১ সালের পর থেকে দেশে কর ফাঁকি আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত ১১ বছরে ফাঁকির পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি হয়েছে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘কর হার কমিয়ে দিয়েও কর ন্যায্যতা করা সম্ভব, যদি কর ফাঁকি রোধ করা যায়, যদি কর প্রশাসন উন্নতি করা যায়, যদি কর ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা হয় এবং কর ভিত্তি বাড়ানো হয়।’
গবেষকরা বলছেন, অতীতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কর প্রণোদনা দিয়ে বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়া হতো। যা থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘রাজস্ব-জিডিপিতে অব্যাহতভাবে সামাজিক খাত অবহেলিত থাকছে। রাজস্বে ভুর্তকি দিতে গিয়ে আমরা শিক্ষায় পর্যাপ্ত বাজেট দিতে পারি না। রাজস্বে ভুর্তকি দিতে গিয়ে আমরা স্বাস্থ্য বিনিয়োগ করতে পারি না। এই ভুর্তকি কাঠামো থেকে আমাদের বেড়িয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশের ভুর্তকি কাঠামো পুরোপুরি রাজনৈতিক।’
সিপিডি মনে করে, দুর্নীতি না কমিয়ে সংস্কার করা হলে সেটি কোন কাজে আসবে না।
সিপিডির জ্যেষ্ঠ সহযোগী গবেষণা পরিচালক তামিম আহমেদ বলেন, ‘প্রত্যকটা খরচ ওই ইনটেনসিভের জন্য আমারা যারা ট্যাক্স দেই কষ্ট করে তাদের জন্য অন্যায্য, এটা রাখা যাবে না।’
প্রণোদনা বা কর ছাড় বিনিয়োগের ভিত্তি হতে পারে না বলেও আলোচনায় উঠে আসে।