লাগামহীন স্বর্ণের দামে দোকানে বেচাকেনা কমেছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, অনেকেই আসছেন পুরাতন স্বর্ণ বিক্রি করতে। আবার যারা আসছেন, তারাও প্রয়োজনের তুলনায় কিনছেন অনেক কম।
এদিকে, বিশ্ববাজারের তুলনায় দেশে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ। ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধসহ নানা সমীকরণে দাম আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা খাত সংশ্লিষ্টদের।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার স্বর্ণের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, অনেকেই আসছেন পুরোনো স্বর্ণের গহনা বিক্রি করতে। দাম বেড়ে যাওয়ায় এই প্রবণতা বলছেন বিক্রেতারা। তারা জানান, নতুন গহনা কেনার ক্রেতার সংখ্যাও কমেছে।
আর ক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত দামের কারণে নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে স্বর্ণ।
একজন বিক্রেতা বলেন, ‘বিক্রেতা দাম বাড়ার কারণে আমাদের সেল একেবারে কম। মানে ব্যবসা বন্ধের উপক্রম। কেনার চেয়ে বিক্রি করতেই আসছে বেশি। কিন্তু আমরা যে কিনে কিনে রাখব, আমাদের তো অর্থের জোগান লাগবে।’
একজন ক্রেতা বলেন, ‘স্বর্ণের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে। আমাদের নাগালের বাহিরে। আগে যেমন চিন্তা করতাম কোনো অনুষ্ঠানে প্রিয়জনকে স্বর্ণ উপহার দেওয়ার, এটা এখন কল্পনারও বাহিরে।’
এদিকে দেশের বাজারে দফায় দফায় সমন্বয় করলেও, বিশ্ব বাজারের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ এর এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বাজারে ভরি প্রতি স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৮৩ হাজার টাকা। সবশেষ হিসেবে, দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার টাকা। আর বিশ্ববাজারে দাম ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
বাড়তি দামের পেছনে স্বর্ণ আমদানি জটিলতা, বাড়তি শুল্কসহ নানা যুক্তি ব্যবসায়ী নেতাদের।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহসভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু গোল্ড ইমপোর্টের কোনো সোর্স নেই। আমরা সরকারের কাছ থেকেও গোল্ড পাচ্ছি না। বাংলাদেশে যে রিফাইনারি চালুর কথা ছিল, সেটিও হয়নি। আমাদের সোর্সটা কি? এটা হচ্ছে লোকাল সোর্সের ওপরই নির্ভরশীল আমরা। হাই প্রোডাক্ট বেশি দামে কিনে আমি তো অল্প দামে বিক্রি করতে পারব না। জয়েন্ট স্টকে যদি স্বর্ণ অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তখন দেখবেন যে বিশ্ব বাজারে যে দাম তার সাথে দেশের বাজারের দাম সমন্বয় হবে।’
গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৭০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। এর ফলে, দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের ভরি ২ লাখ টাকার মাইলফলক ছুঁতে পারে।