মন্দা সময় পার করছে দেশের আবাসন খাত। গত এক বছরের ব্যবধানে ছোট ও মাঝারি ফ্ল্যাট বুকিং ও বিক্রি কমেছে ২৫ শতাংশ। আর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বিক্রি। এমন অবস্থার কারণ হিসেবে ড্যাপের আইনকে দায়ী করছে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব। এছাড়া অর্থনৈতিক মন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ঋণের বাড়তি সুদহারকেও দায়ী করছে রিহ্যাব।
ত্রিমুখী সমস্যার মধ্যে দেশের আবাসন খাত। মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম এই খাতে এখন স্থবিরতা চরমে। প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি বিক্রিতে মন্দা।
রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) তথ্যমতে, ২০২২ সালের ড্যাপের আইনের ফলে দেশে প্রকল্পের কাজ কমেছে। এছাড়া উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ঋণের বাড়তি সুদের জন্য শুধু ঢাকাতেই ছোট ও মাঝারি ফ্ল্যাট বুকিং ও বিক্রি ২০ থেকে ২৫ শতাংশ এবং বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে ।
রিহ্যাবের সিনিয়র সহ–সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘জমি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে এত বেশি রেজিস্ট্রেশন ব্যয় সার্বিকভাবে তারা ইমপোজ করে, যেটার কারণে জনগণ যারা প্লট বা ফ্ল্যাট কেনে, তারা রেজিস্ট্রেশনে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।’
আবাসন খাতে চাহিদা কমায় কারখানা ও গুদামে জমেছে রডের স্তূপ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে রডের বিক্রি। প্রতি টনে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা কমানোর পরও তেমন সাড়া মিলছে না। একইসঙ্গে ২ থেকে ৩ বছর ধরে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি নেই সিমেন্টের ব্যবসায়।
রড এসোসিয়েশন একজন সদস্য বলেন, ‘উন্নয়নের যে একটা জোয়ার এসেছিল আমাদের দেশে, এটা তো ৪ বছর যাবদ ক্রমাগতভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। বড় বড় মেগা প্রজেক্টগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শেষের দিকে যে কয়টা আছে হয়ত টুকটাক করে চলছে।’
কেএসআরএমের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ২০ শতাংশের মতো রিক্যুয়ারমেন্ট কমে গেছে। এর পেছনে মূল যে কারণ সেটা হলো এখন অনেক মেগা প্রজেক্ট প্রায় শেষ প্রান্তে। নতুন কোনো মেগা প্রজেক্ট এখন আসছেও না।’
আবাসন খাতে সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত প্রকল্পের কাজ কমে যাওয়ায় বিক্রি কমেছে ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি, টাইলসের মত অন্যান্য সহযোগী শিল্পের বিক্রিও।