মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাণিজ্য ঘাটতির ভুল সূচকের ভিত্তিতে শুল্কনীতি নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সিদ্ধান্তের পেছনে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবও আছে বলে মনে করেন তিনি ।
শনিবার রাজধানীতে ঢাকা চেম্বার আয়োজিত মতবিনিময়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর রোডম্যাপে মার্কিন শুল্কনীতি মোকাবিলা করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শতাধিক দেশের পণ্যে অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেন। নিজেদের উৎপাদন খাত চাঙ্গা করা ও বাণিজ্যঘাটতি কমানোর লক্ষ্যে বলা হলেও, বিশ্লেষকরা তার নীতিকে বিষাক্ত ও বিভ্রান্তিকর বলছেন। কেননা সেবা বাণিজ্যের উদ্বৃত্ত অবস্থানকে আমলে নেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন।
আমেরিকা এলডিসি দেশগুলোতে রপ্তানি করে ১ শতাংশের কম। আমদানি করে ১০ শতাংশ পণ্য। উদ্বৃত্ত বাণিজ্য থাকায় বাংলাদেশ, কম্বোডিয়াসহ ৫ দেশ চাপে থাকতে পারে। তবে, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার হলে ভবিষ্যতে বড় সুবিধা পাবে দেশ।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘পরিবেশগত, শ্রমগত, বিভিন্ন মানদণ্ডে আমরা এক হতে পারব কি পারব না বলছি, এগুলো শুধু আমেরিকার জন্য নয়। এটা আমার জিএসপি প্লাসের জন্যও লাগবে। প্রতিযোগিতা সক্ষমতার জন্য সংস্কারের কাজটা আমাদের নিজেদের উদ্যোগে করা উচিত। এলডিসি গ্রাজ্যুয়েশনের যে স্ট্র্যাটেজিটা আছে তার সাথে মার্কিন পরিস্থিতি মোকাবিলাকে একত্রিত করে দেখতে হবে।’
আলোচকরা বলেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতির মূল প্রতিপক্ষ কানাডা, মেক্সিকো, চীনের মত দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের অসহযোগিতায় ডব্লিউটিও অনেকটাই অকার্যকর। তাই বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় জোর দিচ্ছে বলে জানান বাণিজ্য সচিব।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা সার্ভিসে কি কি.. করি সেটাকে যদি তারা কনসিডার করে তাহলে আর আমরা তেমন কিছু করব না। যদি না করে তাহলে আমরা গাড়ি যেমন থার্ড কান্ট্রি ইমপোর্ট করা যায় না, ইক্যুইপমেন্টেও আমরা নিষেধ করে দেবো।’
এসময় ব্যবসায়ী নেতারা অভিযোগ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণে বেসরকারি খাতের সঙ্গে খুব কম আলোচনা করছে। তারা বলেন, জ্বালানি সংকটে ভুগছে কারখানাগুলো।
বিটিএমএ পরিচালক রাজীব হায়দার বলেন, ‘আমাদের ব্যবসায়ীদের এখন সবকিছু ছেড়ে একটা জায়গায় যাওয়া দরকার, আমাদের পাওয়ার, গ্যাস ইলেক্ট্রিসিটি দেন। ৩৩ পারসেন্ট বাড়ল, ৩৫ পারসেন্ট বাড়ল পেলামই না তো বাড়িয়ে লাভ কি?’
সেমিনারে জানানো হয়, মার্কিন তুলা আমদানি বাড়াতে ফ্রি-জোন ওয়ারহাউজ সুবিধা দেওয়ার চিন্তা করছে সরকার। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তিতে ১ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বাড়বে। মার্কিন অরিজিন পণ্য অন্যদেশ থেকে আমদানি নিরুৎসাহিত করা হবে।