সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান তেমন সাড়া ফেলতে পারছে না কৃষকদের মধ্যে। সরকারি গুদামে ধান-চাল দেওয়ায় পরিবহন খরচসহ নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয় কৃষকদের। আর দামও বাজারের মতো নয়। তাই হাটে বা ব্যাপারীদের কাছে ধান বিক্রিতে আগ্রহ বেশি কৃষকের।
সরকারি সংগ্রহ অভিযানের জন্য এবার ধানের দাম বাড়িয়ে প্রতিমণ ১ হাজার ৪৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে, এরপরও সরকারি গুদামে ধান-চাল দেওয়ায় আগ্রহ কম নাটোরের কৃষকদের।
জেলার একজন কৃষক বলেন, ‘সরকারের গোডাউনে ধান দিতে গেলে সারাদিন বসে থাকতে হয়। ইউএনওর কাছ থেকে সই আনতে হয়, ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করতে হয়। তারপর ৭দিন পর টাকা পাওয়া যায়। বিভিন্ন ঝামেলা। বাড়িতে ধান বিক্রি করব, ব্যাপারি আসবে। ওরা চিটা বা খারাপ কিছুই দেখে না। নগদ টাকা পাওয়া যায়।’
কুষ্টিয়ার চাষিরা বলছেন, সরকারকে ধান দিতে ভালো করে শুকিয়ে পরিবহন খরচ দিয়ে নিতে হয় গুদামে। অন্যদিকে, ভেজা-শুকনো সব ধরনের ধানই ব্যাপারি নিয়ে যান বাড়িতে এসে। তাই, সরকারের কাছে ধান বিক্রির চেয়ে ব্যাপারীদের কাছে ধান দেওয়ায় ঝক্কি কম।
একজন কৃষক বলেন, ‘সোনালি ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে হবে। ঝামেলা, আমি ধরেন ৪–৫ দিন ঘুরলাম। সরকারকে ধান নিতে হলে চাষির কাছে আসতে হবে।’
পাবনার হাট-বাজারে মোটা ধান ১ হাজার ২৭০ টাকায় ও চিকন ধান ১ হাজার ৬০০ টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা বলছেন, সরকারি গুদামে বাজারের চেয়ে দাম কম, সঙ্গে ঝক্কি-ঝামেলাও বেশি। আবার ধান দেওয়ার পর টাকা পেতে অপেক্ষা করতে হয় বেশ কয়েকদিন।
একই অবস্থা লালমনিরহাট, রাজশাহীসহ অন্যান্য জেলাগুলোতে। তবে, খাদ্য অধিদপ্তরের আশা, ধানের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারের নানা উদ্যোগে এবার সংগ্রহ বাড়বে।
রাজশাহীর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘ধান কেনার ক্ষেত্রে সরকারের মূল লক্ষ্যই থাকে যে কৃষক যেন প্রকৃত মূল্য পায়। যদি কৃষক দাম পায় তখন আর সরকারকে দেবে না। কিন্তু আমরা মিল থেকে যেহেতু চাল কিনি, আমাদের সেই টার্গেট ফিলআপ হয়ে যায়।’
চলতি বছর রাজশাহী অঞ্চলে ৫৪ হাজার মেট্রিক টন ধান ও ২ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।