স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করায় হতাশ রপ্তানিকারকরা। বিকল্প পথে খরচ বাড়ায় বিপাকে ব্যবসায়ীরা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ নিষেধাজ্ঞায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে রপ্তানিতে। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উভয় পক্ষ।
সংকট দূর করতে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চলবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যই বেশি রপ্তানি হয়। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির প্লাস্টিক পণ্য ও আসবাব রপ্তানি হয়। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ ৯০০ কোটি ডলারের আমদানির বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পণ্য রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১৫৭ কোটি ডলারের।
শনিবার ঘোষণা ছাড়াই স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক সহ বেশ কিছু পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করে ভারত। আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে ভারতে তৈরি পোশাক, সুতা, সুতার উপজাত স্থলপথে রপ্তানি করা যাবে না। পাশাপাশি ফল, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, আসবাবপত্র রপ্তানিতেও দেয়া হয়েছে বিধিনিষেধ। বড় রপ্তানিকারকদের পাশাপাশি শুধুমাত্র ভারতে পোশাক রপ্তানি করে এদেশের শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তা। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে তাদের।
প্রাণ আরএফএল গ্রুপের পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, ‘সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতের বাজারে আমরা পণ্য রপ্তানি করতে পারি না। এটা অনেক ব্যয়বহুল আমাদের জন্য। খরচের কথা বলা হলে সেটা স্থলবন্দরের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ বেশি।’
রপ্তানিকারক হাবিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সময়ের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি ট্রাকে করে পাঠাই, তাহলে সময়ে বিবেচনায় এটা অনেক বেশি সুবিধাজনক।’
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াতে বিশদ আলোচনার তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ এম এস সিদ্দিকী বলেন, ‘তারা ইচ্ছা করলে ফুল কনসাইন্টমেন্ট এক কনটেইনারে লোড করে যে পাঠাবে তাদের সে সক্ষমতা নেই। যেসব আমদানিকারক এসব আমদানি করে তারাও কিন্তু এমএমই। উভয় দেশের এসএমইগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এটা বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার একটা প্রক্রিয়া। আমরা কাজ করছি এবং আশা করি এ বিষয়ে যদি কোনো সমস্যা তৈরি হয় তাহলে উভয়পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে একটা উপযুক্ত পরিণতি টানা যাবে।’
মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল ও ভাঙা পাথর নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাখেনি ভারত।