অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ৫ শতাংশ করারোপের প্রস্তাব দিয়েছে আমেরিকা। ফলে, ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে হুন্ডি প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রবাসীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আসার অন্যতম উৎস আমেরিকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস (জুলাই থেকে এপ্রিল) দেশটি থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ৪২৭ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা দেশে আসা মোট প্রবাসী আয়ের ১৮ শতাংশ।
এদিকে, গত রোববার আমেরিকার অভিবাসীদের প্রবাসী আয়ে ৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে, আওতাভুক্ত হবে গ্রিন কার্ডধারী ও এইচ-১বি ভিসাপ্রাপ্তরাও, যা আইনে পরিণত হলে দেশটি থেকে অবৈধভাবে প্রবাসী আয় আসা বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, ‘এগুলো কিন্তু অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। এরই মধ্যে এ নিয়ে সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর একটা ইমেডিয়েট ইমপ্যাক্ট পড়বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। এবং সেটা রেমিট্যান্স প্রবাহের ওপরে একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
তবে, এ সিদ্ধান্তে দেশে আসা প্রবাসী আয়ে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘এটা বড় ধরনের কোনো প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি না। তারপরও সরকার অবশ্যই বিষয়টি দেখবে এবং প্রবাসী যারা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে তাদের পরিবারও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টিও সরকার দেখবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করছি।’
প্রবাসী আয় হলো দেশে মার্কিন ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ৫ শতাংশ কর বাস্তবায়িত হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর এ দায়বিহীন ডলার পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল মাসে আমেরিকা থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৩ কোটি ৭ লাখ ডলার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার অভিবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। গ্রিন কার্ডধারী ও এইচ-১বি ভিসাপ্রাপ্তরাও এর আওতায় পড়বেন। দেশটির হাউস অব রেপ্রেজেনটেটিভে এই বিল পাস হয়েছে। এরপর তা সিনেটে উত্থাপিত হবে।