দেশের পুঁজিবাজার থেকে ২০১০-১১ সালে ২০ হাজার কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি জানান, এর মধ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
নিবার রাজধানীতে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সংলাপে তিনি এ দাবি করেন। এসময় বাজার ঠিক করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান বিশ্লেষকরা।
পুঁজিবাজার সংস্কারে আগামী দিনের রাজনৈতিক সরকারের পরিকল্পনা ও দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে, তা নিয়ে সংলাপের আয়োজন করে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন। এতে আলোচনা করেন রাজনৈতিক দলের নেতা ও অর্থনীতিবিদসহ খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, আগামীতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে হলে পুঁজিবাজারকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। এ সময় পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা আনার ওপরও জোর দেন তিনি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশকে যদি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়, যখন কেউ জিজ্ঞেস করে, এক নম্বরে বিনিয়োগ, দুই নম্বরে বিনিয়োগ এবং তিন নম্বরেও বিনিয়োগ। এর বাহিরে কিছু নাই কিন্তু। এই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের ইনভেস্টমেন্টে ফোকাস রাখতে হবে।’
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, পুঁজিবাজারের দুরবস্থা ভালো হওয়ার লক্ষণ নেই। এলডিসি উত্তরণের জন্য পুঁজিবাজারকে উন্নয়নের হাতিয়ার হিসেবে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে সম্পর্কিত সিন্ডিকেটরা কাজ করেছিল, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা এটাকে প্রভাবিত করেছে এবং এটার ফলে আমাদের কিভাবে আমাদের আরও হাজার হাজার কোটি টাকা, ২০ হাজার কোটি টাকা এখান থেকে গেছে।’
এসময় দেবপ্রিয় আরও জানান, রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে ৯৬ ও ২০১০ সালের কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। কারসাজিকারীদের শাস্তি না দেওয়ায় পুঁজিবাজারের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। টোটকা ওষুধ দিয়ে পুঁজিবাজারকে ঠিক করা যাবে না বলেও মনে করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘সকলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে প্যাকেজ দাঁড়া করানো খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্যাকেজের সাথে ব্যাংকিং খাত, আমাদের যে কর ব্যবস্থা এগুলোর সম্পর্ক আছে। কদিন পরেই বাজেট আসছে। আমি দেখতে চাই, সে বাজেটে পূর্ণাঙ্গভাবে এই প্যাকেজটি যেন প্রতিফলিত হয়।’
অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজার সংস্কারে অংশীজনদের সাথে আলোচনায় জোর দেন বক্তারা। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা বাস্তবায়নে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থার কথাও বলেন তারা।