সাভারের শিল্পপার্কে ১০ থেকে ১৫টি ট্যানারি লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সনদের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সিইটিপি পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় তা অর্জন সম্ভব হচ্ছেনা। এতে চামড়ার ভালো দাম পাচ্ছেন না বলে দাবি ট্যানারি মালিকদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ কর্তৃপক্ষ গঠনের মাধ্যমে সমন্বিত পরিকল্পনায় কয়েক বছরেই মিলতে পারে সুফল।
হাজারিবাগ থেকে প্রায় ১ দশক আগে সাভারে স্থানান্তর করা হয় ট্যানারিগুলো। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত হয়নি। দুই দশকের চেষ্টাতেও গড়ে তোলা যায়নি মানসম্পন্ন শিল্প পার্ক।
তরল বর্জ্য পরিশোধনে স্থাপন করা কেন্দ্রীয় শোধনাগার সিইটিপি পুরোপুরি কাজে আসছে না। কারণ, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অসম্পূর্ণ রেখেই তা হস্তান্তর করে গেছে। সেইসঙ্গে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় তেমন উদ্যোগ নেই। এসব কারণে বৈশ্বিক ক্রেতাদের জোট এলডব্লিউজি সনদ মিলছে না। তাই মিলছে না আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের ক্রেতা।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ বলেন, ‘১ হাজার ৭১০ মার্কের মধ্যে কিন্তু ৩০০ হলো আমার তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। ১০ থেকে ১৫টি ট্যানারি এই অবস্থায় আছে যে তাদের ১ হাজার ৪১০ মার্কের কাছাকাছি আছে, আমার ট্যানারি অ্যান্ডে আমার যেটা প্রয়োজন। আমি যদি এই তরল ও কঠিন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারি কালকে, তাহলে কিন্তু আমি এলডব্লিউজি সনদের জন্য অডিটরকে কল করতে পারি।’
কয়েকবছর ধরে চামড়া খাতের উন্নয়নে বিশেষ কর্তৃপক্ষ গঠনের কথা বলা হলেও, তা বাস্তবতার মুখ দেখেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিইটিপির উন্নয়ন, এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া, কাঁচা চামড়ার উন্নত সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মত বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। থাকতে হবে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষ কমিটি।
এলডব্লিউজি নিরীক্ষক আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি একজন অডিটর হিসেবে বলতে চাই, সিলেবাসটা আমাদের ভালো করে জানতে হবে। কোনো ইন্ডাস্ট্রি পরিবেশ নষ্ট করে ব্যবসা করতে পারবে না। এজন্যই আমার সিএটিপিকে ঠিক করা দরকার। এরপর আমার সার্টিফিকেশন। যদি আমি সুন্দর একটা টেকনিক্যাল কমিটি করতে পারি, যোগ্য লোক নিয়ে। তাহলে আমি আশাবাদী, ৫ বছর পরে আমরা সার্টিফিকেশন পেয়ে যাব।’
চলতি অর্থবছর মে পর্যন্ত ১১ মাসে চামড়া রপ্তানি কমেছে প্রায় ৮ ভাগ। চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ৩ দশমিক ৪ ভাগ। তবে, অনেকটাই আমদানি নির্ভর চামড়ায় তৈরি জুতা রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২৯ ভাগ।